লকডাউনের খবরে নিত্যপণ্যের দোকানে ভিড়
মাসুদ মিয়া ও সুজন কৈরী : করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আবারও ‘লকডাউনের’ ঘোষণা খবরে নিত্যপণ্যের দ্রব্যের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। অনেকেই প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাড়ি ফিরছেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দোকানিরা জানান, বেলা ১২ টার পর থেকে দোকানে ক্রেতা সমাগম বাড়তে শুরু করে। অনেকেই ১০ থেকে ১৫ দিনের বাজার একবারে সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরছেন। এসব বাজারে সাধারণত দুপুর ১টার পরে ভিড় দেখা যায় না। তবে লকডাউন আসছে— এমন খবরে দুপুরের পর থেকে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। সময় যত যাচ্ছে ক্রেতারা তত ভিড় জমাচ্ছেন।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৩ থেকে ৬৫ টাকা, গুটি চাল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, দেশি রসুন ৭০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকা, মোটা ডাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, ছোলা ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের ডজন মিলছে ৯০ টাকায়।
লক্ষিবাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী সোহানুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সামনে রমজান মাস তাই আগে থেকে বাজার করার পরিকল্পনা ছিল। ভেবেছিলাম আরও কয়েকদিন পর করব। গতকাল শনিবার হঠাৎ লকডাউনের ঘোষণার পর দ্রুত বাজারে আসতে হলো। লকডাউনের কারণে যদি দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারব না। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি পিস মাস্কের দাম বেড়েছে কয়েকদিন আগে গাড়িতে ৫পিচ মাস্ক বিক্রয় করতো ১০ টাকা গতকাল সেখানে ৩পিচ মাস্ক বিক্রয় করছে ১০ টাকা।
এদিকে ফার্মেসি ও বিভিন্ন দোকানে বেড়েছে হ্যান্ডওয়াশ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চাহিদা। নারিন্দা কাঁচাবাজারের মুদি দোকানদার কামাল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে লাইফবয়, স্যাভলন ও ডেটল হ্যান্ডওয়াশের রিফিল প্যাক শেষ হয়ে গেছে। ক্রেতা আসছেন কিন্তু দোকানে মজুত না থাকায় দিতে পারছি না। উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানান, করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।
এদিকে লকডাউনকে পুঁজি করে কোনও অসাধু চক্র নিত্যপণ্যের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
শনিবার র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউনের সুযোগ নিয়ে কোনো অসাধু চক্র যেন জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে না পারে সেই লক্ষ্যে আমরা মাঠে থাকব। এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকবে র্যাব। কোনো অসাধু ব্যক্তি বা চক্র এ পরিস্থিতিকে পুঁজি করে যেন কোনো ধরনের অবৈধ কাজ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তুলতে আমরা ইতোমধ্যে লিফলেট তৈরি করেছি। র্যাবের টহল দল সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট বিতরণ করবে। এছাড়াও সরকারের দেওয়া নির্দেশনা পালন করবে।