নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের নতুন রেকর্ড ৭০৮৭, মৃত্যু ৫৩
ফাতেমা আহমেদ : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় নতুন রেকর্ড হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৭ হাজার ৮৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৩ জনের। একদিনে সাত হাজারের বেশি সংক্রমণ শনাক্তের ঘটনা এই প্রথম। এর আগে, গত শুক্রবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৮৩০ জনের নমুনা করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ৫৩ জন। এ নিয়ে দেশে অষ্টম দিনের মতো একদিনে ৫০ জনের বেশি মারা গেলেন। এর আগে গত বছরের ১৬ জুন একদিনে ৫৩ জন মারা গিয়েছিলেন। এ ছাড়া গত বছরের ২৬ জুলাই ও ২৬ আগস্ট ৫৪ জন এবং ৫ ও ৭ জুলাই ৫৫ জন মারা গিয়েছিল। এ মাসের ৩ এপ্রিল ৫৮ জন ও ১ এপ্রিল ৫৯ জন এবং গত বছরের ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জন মারা গিয়েছিলেন।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সই করা কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সংক্রমণ ও মৃতের তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার ল্যাব ছিল ২২৭টি। এর মধ্যে সরকারি আরটি-পিসিআর ল্যাব ৫২টি, বেসরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব ৬৮টি; জিন এক্সপার্ট ল্যাব সরকারি ৩২টি, বেসরকারি ২টি; র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ছিল ৭৩টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ৩১ হাজার ৪৯৩টি। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩০ হাজার ৭২৪টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৫টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ লাখ ৪ হাজার ৫২০টি আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৬৫টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮৭টি। এ পর্যন্ত দেশে শনাক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪টি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭০৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৮২ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৫৩ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ৯ হাজার ২৬৬ জন।
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৭। এ পর্যন্ত গড় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩২। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৬৮, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫। মৃত ৫৩ জনের মধ্যে পুরুষ ৪৫ জন আর নারী ৮ জন। মোট মৃতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৬ হাজার ৯৭০ জন আর নারী ২ হাজার ২৯৬ জন।
মৃতদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রয়েছেন একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রয়েছেন দুইজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বযসী রয়েছেন পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ১১ জন, ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৩৪ জন।
বিভাগওয়ারী মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের রয়েছে ৩৭ জন। এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৫ হাজার ৩০৪ জন। মোট মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের মৃতদের হার ৫৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৯ জন। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মারা গেছেন ১ হাজার ৬ শ ৭৩ জন। মোট মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মৃতের হার ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ।
রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন একজন, এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৫০৯ জন। মৃতদের মধ্যে রাজশাহী বিভাগে মৃত্যুর শতকরা হার ৫ দশমিক ৪৯।
রংপুরে মারা গেছেন তিনজন। মৃতদের মধ্যে রংপুরে মারা গেছেন ৩৮০ জন মোট মৃত্যুর ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এ ছাড়া ময়মনসিংহে মারা গেছেন তিন জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২০৫ জন যা মোট মৃত্যুর ২ দশমিক ২১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জনের মধ্যে বাসায় মারা গেছেন একজন, হাসপাতালে মারা গেছেন ৫২ জন।
রোববার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সারাদেশে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন মোট ৬৯ লাখ ৯ হাজার ৫০৭ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৩৯ হাজার ৮৪৩ জন। গত ২৭ জানুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৭০৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৮২ জন হয়েছে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৩ কোটি ৮ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৪৭ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে। সূত্র : সারাবাংলা, বাংলা ট্রিবিউন, জাগোনিউজ, বার্তা ২৪