বিশ^বাজারে চালের দাম কমেছে ৫ আর দেশে বেড়েছে ১০ শতাংশ
বিশ^জিৎ দত্ত : বিশ^বাজারে চালের মূল্য ৫ শতাংশ কমলেও বাংলাদেশে চালের মূল্য বেড়েছে। ভিয়েতনাম খাদ্য এ্যাসোসিয়েশান জানিয়েছে, বিশ^বাজারে চালের চাহিদা কমে যাওয়া ও ডলার এডজাস্টমেন্টের কারণে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে বিশ^বাজারে চালের দাম ৫ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে একই সময়ে চালের দাম প্রতিটনে বেড়েছে ১০ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত চিকন চাল দেশের বাজারে বিক্রি হয়েছে প্রতিটন ৬০ থেকে ৬৩ হাজার টাকায়। মোটা চাল প্রতিটন বিক্রি হয়েছে ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায়।
ভিয়েতনাম খাদ্য অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে বিশ^বাজারে ভিয়েতনামের চাল রপ্তানি হতো প্রতিটন ৪৯৮ থেকে ৫০২ডলারে। বর্তমানে তা রপ্তানি হচ্ছে ৪২৮ থেকে ৪৩২ ডলারে। একইভাবে থাইল্যান্ডের ৪৯০ ডলার থেকে ৪৩২ ডলার হয়েছে। ভারতের চাল প্রতি টন ৩৬০ থেকে ৩৮০ ডলারে নেমে এসেছে। এরবাইরে ভারতে ও থাইল্যান্ডে স্থানীয় মূদ্রার সঙ্গে ডলারের সামঞ্জস্য বিধান করা হয়েছে। তাতেও চালের দাম কিছুটা কমেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ভারত থেকে প্রায় ২ লাখ টন চাল আমদানি করেছে। আবার বেসরকারি আমদানিকারকরাও আরো আড়াইলাখ টন চাল আমদানি করেছে। সরকার আরো ৫০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বুরো ফসল কাটার সময় হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ১০ লাখ টন ধান বেশি হবে। নতুন চাল বাজারে আসলে চালের মূল্য কমে যাবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, দেশে আপদকালীন ৫ লাখ টন চাল মজুদ রয়েছে। বুরো মওসুমে তারা আরও ২ লাখ টন চাল সংগ্রহ করবে। করোনাকালীন সময়ে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি ও চাল সহায়তা দেয়ার কারণে সরকারের চালের মজুদ কম হয়েছে। গত বছর সরকারের কাছে চালের মজুদ ছিল ১০ লাখ টন।
এ বিষয়ে রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিজি ড. শাহজাহান কবীর জানান, সরকারের কাছে চালের মজুদ কম রয়েছে এই খবর ব্যবসায়ীদের কাছে গেলে তারা চালের মূল্য বৃদ্ধি করে দেয়। সারাদেশ ব্যাপি বড় চাল কলের মালিকরা এক্ষেত্রে একত্রে কাজ করে।
এরবাইরে রয়েছে আরো কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী যারা মজুদের মাধ্যমে ব্যবসা করে। বাজারে চালের সংকট নেই কিন্তু চালের দাম বেশি। এটির মানেই হলো কোথাও না কোথাও কারসাজি হচ্ছে। তিনি আশাবাদি বুরো ফসলে যদি প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হয় তবে চালের মূল্য আবারো কমবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, বেসরকারিভাবে চাল আমদানি আরো বাড়লে চালের মূল্য কমে যাবে। এমনকি বিনাশুল্কে চাল আমদানির ব্যবস্থাও সরকার করতে পারে। তিনি জানান, বিশ^বাজারে চালের দাম কমছে। সুতরাং চালের সংকট দেশে হবে না।