আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৪
করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনা চিকিৎসায় দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল চালু হচ্ছে মহাখালীতে
অর্থনীতি ডেস্ক : করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মহাখালী মার্কেটকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হচ্ছে। ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে ১০০টি আইসিইউ শয্যা এবং ১১২টি এইচডিইউ থাকবে। এটিই হবে করোনা চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় হাসপাতাল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এ হাসপাতাল বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এপ্রিলের মাঝামাঝি এখানে সেবাদান শুরু হবে। চলতি মাসের শেষ দিকে প্রায় পূর্ণাঙ্গভাবে হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করবে।
এটি পরিচালনা করবে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। তবে এ হাসপাতাল পরিচালনায় ৫০০ চিকিৎসক, ৭০০ নার্স ও ৭০০ স্টাফ এবং ওষুধ-সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে নির্মিত কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘দেশে আশঙ্কাজনকভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। টিকার প্রথম ডোজ নিয়েও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর কারণ হলো টিকা নেওয়ার পর তারা বেপরোয়া চলাচল করতে শুরু করেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, টিকা নিয়ে তারা করোনা প্রতিরোধী হয়ে গেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দুই ডোজের। প্রথম ডোজ নিলেই অ্যান্টিবডি হয় না। টিকা নিয়ে যারাই আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেপরোয়া চলাচলই দায়ী।’
তিনি বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে ঢাকার সব হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করছি। আড়াই হাজার শয্যাকে পাঁচ হাজার করা হয়েছে, এরচেয়ে বেশি বাড়ানো সম্ভব না। প্রতিদিন যদি ৪-৫ হাজার রোগী বাড়ে তাহলে সারা শহরকে হাসপাতাল বানালেও সামাল দেওয়া সম্ভব না।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের জনগণের জন্যই লকডাউন। আমি আশা করি, জনগণ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবেন। প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে, জনগণ সচেতন হচ্ছে। তবে সতর্ক না হলে মনে রাখতে হবে, পাঁচ হাজার শয্যার পর হাসপাতালগুলোতে এক ইঞ্চি জায়গা নেই আর শয্যা স্থাপনের।
হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আশা করি এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ২৫০ শয্যা এবং কিছু আইসিইউ শয্যা চালু করতে পারব। মাসের শেষ দিকে প্রায় পূর্ণাঙ্গভাবে হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করবে। এখানে শুধু করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হবে। এখানে কোনো অপারেশন করা হবে না। কারও অপারেশন দরকার হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করানো হবে।’
এতদিন এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা এ মার্কেটটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু হলে সেসব সেবার ব্যবস্থা কীভাবে করা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সেগুলো বন্ধ হবে না। বিদেশগামীদের জন্য একপাশে পৃথক জায়গা রাখা হবে।’
গত বছরের ৯ আগস্ট পরিদর্শনে গিয়ে মহাখালীর এই মার্কেটটিকে ৫০০ শয্যার আরবান (নগর) হাসপাতালে রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘৭ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ডিএনসিসি মার্কেটটি মূলত পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এখন এটিকে কীভাবে আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করা যায়, আমরা তার পরিকল্পনা করছি। এই ভবনকে আমরা যদি আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করতে পারি, তাহলে নগরবাসীর জন্য অনেক সুবিধা হবে।’