রাজধানীতে রাইড শেয়ারিং চালুর দাবিতে বাইকারদের বিক্ষোভ
সুজন কৈরী : রাইড শেয়ারিং সেবা চালুর দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন মোটরসাইকেল চালকরা। তারা দ্রুত এ সেবা চালু করার দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাব, মগবাজার মোড়, খিলক্ষেত এলাকায় মোটরসাইকেল চালকরা এ বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের কারণে সড়কে যান চলাচল ব্যহত হয়।
বিক্ষোভ থেকে মোটরসাইকেল চালকরা বলেন, সরকারকে দ্রুত রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করতে হবে। আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমাদের একমাত্র আয়ের উৎস রাইড শেয়ারিং সার্ভিস। সেটি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা এখন বেকার। রাস্তায় যাত্রী নিয়ে বের হলে পুলিশ মামলা দেয়। দ্রুত রাইড শেয়ারিং সেবা চালু এবং অহেতুক মামলা বন্ধ করতে আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি।
বাইক রাইডারদের অভিযোগ, মোটরসাইকেলে দুজন চলতে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
সাহানুর রহমান সোহাগ নামের একজন বাইক চালক বলেন, বাইক শেয়ারিংটি আমাদের রুটি-রুজির একটি মাধ্যম। তিনদিন ধরে মোটরসাইকেল চালাতে পারছি না। চুক্তিতে শেয়ার করলে পুলিশ মোটরসাইকেল আটকিয়ে দিড় থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত মামলা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঋণ করে মোটরসাইকেলটি কিনেছি। প্রতি মাসে কিস্তি দিতে হয়। তিন দিন ধরে রাইড শেয়ার করতে পারছিনা। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছি। আমার মত অনেক ভাই আছেন যারা রাইড শেয়ার করে পরিবার চালান। লকডাউনে সবারই আমার মতো দূরাবস্থা।
আমানউল্লাহ নামের শেয়ারে বাইক চালকদের একজন বলেন, একজনকে নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার সময় পথে পুলিশ তাকে আটকায়। বন্ধু পরিচয়ের পাশপাশি অনেক অনুরোধ করার পর পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। তাদের সহকর্মীদের মধ্যে একজনকে মিরপুরে আটকায় পুলিশ। সেখানে মামলা দিলে অন্যন্য সহকর্মীরা সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। একইভাবে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ হয়।
বিক্ষোভের বিষয়ে রমনা থানার এসআই নাসির উদ্দীন বলেন, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ র্যালি নিয়ে শান্তিনগরে এসে রাস্তা অবরোধ করেন। পরে তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তারা মগবাজার এলাকায় অবস্থান করছেন।
এদিকে সকালে বিমানবন্দর সড়কে বিক্ষোভ করেছেন মোটরসাইকেল চালকরা জানিয়ে খিলখেত থানার এসআই সজল বলেন, বিভিন্ন দাবি নিয়ে মোটরসাইকেল চালকরা ১১টার দিকে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। পরে ঘটনাস্থলে আমাদের টিম গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এছাড়া বুধবার দুপুরে মগবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন চালকরা। তখন সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে সাত রাস্তা মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন রাইডাররা। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।
ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুন-অর-রশিদ বলেন, সরকার থেকে নির্দেশনা আছে রাইড শেয়ার বন্ধ রাখার জন্য। আমাদের সেইভাবেই বলা হয়েছ। আমরা রাস্তায় রাইড শেয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে তাই মামলা করছি। সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কিছু চালক অহেতুক অযৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছে বলেও জানান তিনি।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এক সপ্তাহের লকডাউন জারির পর রাইড শেয়ারিংয়েও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে মানুষের দুর্ভোগ এড়াতে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে গণপরিবহন চালুর উপর নিষেধাজ্ঞা বুধবার তুলে নেওয়া হয়। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও