স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ইন্দ্রমোহন রাজবংশী প্রয়াত
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী ও গবেষক ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আলাদা বার্তায় ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর মৃত্যুতে শোক জানান প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি।
বঙ্গভবন প্রেস উইং জানায়, একুশে পদক প্রাপ্ত বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি প্রয়াত ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, দেশের লোকগানের বিকাশে একুশে পদকপ্রাপ্ত এ গুণী শিল্পীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ইন্দ্রমোহন রাজবংশী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমসের উদ্বোধনী আসরের রিহার্সালের সময় মাথা ঘুরে পড়ে যায়। সেই থেকেই তিনি অসুস্থ। বুধবার আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তাকে হারানোর ক্ষতি পূরণ হবে না। ’
ইন্দ্রমোহন রাজবংশীর জন্ম ঢাকায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজের নাম পরিচয় গোপন করে পাকিস্তানিদের দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন । পরবর্তীতে সেখান থেকে চলে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এই কিংবদন্তি।
তার পরিবারের পাঁচ পুরুষ সংগীতের সঙ্গে যুক্ত। সংগীত কলেজে লোকসঙ্গীত বিভাগের প্রধান হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন পাঠদান করেছেন। তিনি বাংলাদেশ লোকসংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৬৭ সালে ‘চেনা অচেনা’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করেন।
ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গানের পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত তিনি। দেশের সংগীতাঙ্গণে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৮ সালে সংগীত বিভাগে একুশে পদক লাভ করেন খ্যাতিমান এই সংগীতশিল্পী।
গান গাওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকগান সংগ্রহ করতেন তিনি। দেশের সহস্রাধিক কবির লেখা কয়েক লাখ গান সংগ্রহ করেছেন তিনি।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মৃত্যুকালে স্ত্রী দীপ্তি রাজবংশী, পুত্র রবীন রাজবংশী ও মেয়ে প্রবাসীসহ অসংখ্য গুণমুগ্ধ ভক্ত রেখে গেছেন।