করোনার মধ্যে মেট্রোরেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬২ শতাংশ
অর্থনীতি ডেস্ক : এর প্রথম অংশ উত্তরা তৃতীয় ফেইজ থেকে আগারগাঁও এর অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ।
ইতোমধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণে ভারতসহ অন্যান্য দেশকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এসব দেশে যেসব বিষয় আমলে নিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ একই পথ অনুসরণ করবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটি এসব তথ্য জানায়।
বৃহস্পতিবার ডিএমটিসিএল মেট্রোরেল-৬ এর সর্বশেষ অগ্রগতি প্রকাশ করে। প্রকাশিত অগ্রগতিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডিএমটিসিএল জানায়, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৬২ শতাংশ। ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৩ দশমিক ২৭৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে ১৬ দশমিক ৯০ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে।
ভায়াডাক্টের উপরে ১০ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক প্লিন্থ কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ, দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ।
ভাড়া নির্ধারণ প্রসঙ্গে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ভাড়া নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছে, আমরা তথ্য দিয়েছি। আমরা বলেছি, আশপাশের দেশে যেভাবে ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে সেইভাবে ভাড়া নির্ধারণ হতে হবে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে যেভাবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এটা ফলো করা যেতে পারে।
ফাস্টট্র্যাক অগ্রগতি প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এগিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। ২০১২ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। শুরু থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৩৯৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
টিকিট কাউন্টার, বিশ্রামাগার, খাবারের স্বয়ংক্রিয় দোকান, নামাজের জায়গা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট, অপারেশন ও মেইনটেন্সে রুম, বিনাটিকিটে বা টিকিটের অতিরিক্ত গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং ব্যবস্থা, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, উপরে ওঠার সিড়ি, এসকিলেটর (চলন্ত সিড়ি), লিফটসহ নানা আয়োজন থাকছে স্টেশগুলোতে। প্রতিটি স্টেশনে রেলগাড়ি দাঁড়াবে ৪৫ সেকেন্ড।
ট্রেনের এক একটি বগিতে ৫৪ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। পিক সময়ে (অফিস যাওয়া ও আসার সময়) বসে এবং দাঁড়িয়ে মিলে মোট ২ হাজার ৩০৮ জন যেতে পারবেন একটি ট্রেনে। স্বাভাবিক সময়ে এক হাজার ৭৩৮ জন যাতায়াত করতে পারবেন। প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য থাকবে একটি করে বিশেষ বগি।
এছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে প্রতিটি বগির দরজার পাশে হুইল চেয়ার আটকানোর ব্যবস্থাও।
মিরপুর-১০ নম্বর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া এবং আগারগাঁও এলাকায়, করোনার মধ্যেও ব্যাপক কর্মতৎপরতা চলছে। স্টেশনগুলোর কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। সূত্র : সারাবাংলা, বাংলানিউজ, জাগোনিউজ।