ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়া যুক্তিসঙ্গত : অধ্যাপক আবু আহমেদ
শাহিন হাওলাদার : ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে শেয়ারবাজারে দর পতন হবেÑ বিনিয়োগকারীদের এমন মানসিকতার কারণে দর পতন হয়েছে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পরেও ১০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার আছে। নিচের দিকে গিয়ে আটকে ছিলো এসব শেয়ারের অধিকাংশ। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পরেও ট্রেডিং হয়নি। ফ্লোর প্রাইস বলতে পৃথিবীর কোথাও কিছু নেই। বাংলাদেশের কিছু বিনোয়োগকারী মনে করে, এটা তাদের রক্ষাকবচ। ফ্লোর প্রাইস দিয়ে কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য হয় না। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কারণে যে দরপতন হয়েছে, তা আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন অর্থনীতি অধ্যাপক আবু আহমেদ।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে শেয়ারবাজার আগের মতো না থাকলেও তুলনামূলকভাবে এখন মোটামুটি স্থিতিশীল আছে। শেয়ারবাজারের নিজস্বতা বলতে কিছু নেই। সার্বিক অথনীতি খারাপ হলে শেয়ারবাজারের ওপর তার প্রভাব পরে। করোনা একটি বৈশ্বিক মহামারি। এটি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলার ফলে শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মহামারিতে অন্যকোনো খাতে যেহেতু আয় রেজগার নেই, তাই সবাই শেয়ারবাজারের ঝুঁকছে। ফলে পৃথিবীর বড় বড় শেয়ারবাজারগুলো ভালো অবস্থানে আছে। বাংলাদেশের ব্যাংকে এখন টাকা রাখা যায় না। ব্যাংকের থেকে শেয়ারবাজার ভালো রিটার্ন দেয়। যারা ভয় পায় তারা হয়তো শেয়ারবাজারে যাবে না। যারা শিক্ষিত তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের চেষ্টা করে দেখতে পারে কারণ ভালো ভালো শেয়ারের দাম এখন অনেক কম। শেয়ারবাজারে এখন ১০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ করা যায়। অনেক ব্যাংক তো ৩ শতাংশও দেয় না। ফ্লোর প্রাইস ঝুলে থাকলে ভালো হতো না। আস্তে আস্তে শেয়ারের দর স্বাভাবিক হবে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে আপাতত সমস্যা হলেও পরে ঘুরে দাঁড়াবে। ফ্লোর প্রাইস থাকা উচিত না।
তিনি আরও বলেন, বাজার অর্থনীতিতে পৃথিবীর কোথাও ফ্লোর প্রাইস নেই। আগের কমিশন ফ্লোর প্রাইস করেছিলো দর-পতনের ভয়ে। তারা ৩৯০০ ইন্ডেক্সে করেছিলো এখন তো ৫৩০০। ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়ার পর যারা আতঙ্কে আছে তারা ব্যবসা বোঝেন না অথবা তারা সাময়িক সময়ের জন্য শেয়ার বাজারে এসেছিলো। তারা অল্প-পুঁজি নিয়ে দেখতে আসে কিছু পায় কিনা আসলে তারা কখনোই কিছু পায় না একটা সময় হারিয়ে যায়। স্টক মার্কেটের মাধ্যমে পৃথিবীতে যারা ধনী হয়েছে তারা সবাই বিনোয়োগকারী। শেয়ারবাজরের ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীতে মানসিকতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কৃত্রিমভাবে কেউ বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারে না। ফ্লোর প্রাইস ছিলো একটি কৃত্রিম পদ্ধতি। বাজার যেখানে যাওয়ার সেখানেই যাবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে ভালো শেয়ার থাকতে হবে। সামনের বাজেটে শেয়ারবাজারের পক্ষে ভালো প্রণোদনা রাখতে হবে। কর্পোরেট আয়ের ওপর ট্যাক্স কমাতে হবে। তাহলে নতুন ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে আগ্রহ দেখাবে, ফলে গ্রাহকরাও সুবিধা পাবে।