শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মোবাইল অ্যাপসে আগ্রহ বেড়েছে
মাসুদ মিয়া : করোনা পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহের জন্য সরকার ঘোষিত লকডাউনের পর থেকে দেশের উভয় শেয়ারবাজারে সূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। লকডাউনের কারণে লেনদেন চলাকালীন সময়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি কম ছিল। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন, ই-মেইল, অনলাইন ও অ্যাপসের মাধ্যমে লেনদেন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন বলে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ সূত্রে জানা গেছে। লকডাউনে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সকাল ১০টা থেকে লেনদেন শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে। তবে গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) লকডাউনের মধ্যে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু রাখার সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। যে কারণে টানা তিন কার্যদিবস বাজারে বড় উত্থান হয়। হঠাৎ বুধবার বিএসইসি ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্কে দেখা দেয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বাজারে। করোনা সংক্রমণরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের ঘরে বসে শেয়ারের লেনদেন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে মোবাইল ফোন বা অনলাইনে লেনদেন করেছেন। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলের দিলকুশায় ইবিএল সিকিউরিটিজ, সাব ভ্যালি সিকিউরিটিজ, শহীদুল্লাহ সিকিউরিটিজ ও শাকিল রিজভী স্টক ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্রোকারেজ হাউজে করোনা পরিস্থিতিতে হ্যান্ডশেক বা আলিঙ্গন না করা, পরিমিত দূরত্ব বজায় রাখা, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ক্লায়েন্টের হাঁচি-কাশি বা সন্দেহজনক লক্ষণ থাকলে তাদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, অফিস প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য প্রতিবার হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা, ব্রোকারেজ হাউজে কর্মচারী এবং ক্লায়েন্টদের মাস্ক সরবরাহ করা ও দর্শনার্থীদের অফিসে প্রবেশ করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, লকডাউনের প্রথম দিন থেকে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী বাসায় থেকে লেনদেন করেছেন। লেনদেনের ক্ষেত্রে তারা মোবাইল ফোন বা অ্যাপস ব্যবহার করেছেন। তবে কিছু বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে এসেও লেনদেন করেছেন। সেক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি পরিপালন করা হয়েছে। এবিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই লেনদেন করছেন। ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে বিনিয়োগকারীদের এ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।