ভোলায় তরমুজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ৯২ কোটি টাকা
জেএম মমিন : অনুকূল পরিবেশ, ভালো জাত ও বীজ নির্বাচন, বাজারব্যবস্থা, রোগব্যাধি ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ফলন ভালো হয়েছে এমন দাবি কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের।
বিস্তৃত চরজুড়ে তরমুজ আর তরমুজ। গরমের শুরুতেই জনপ্রিয় এই ফলটির আবাদ শুরু করছেন চাষিরা। পুষ্টি ও ভেষজগুণ সম্পন্ন এ ফলটির বাজার দাম রয়েছে বেশ ভালো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আশাবাদ এবছর জেলায় প্রায় ৯২ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হবে।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর জেলায় তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৭২২ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ৫৫৫৬ হেক্টর। অন্যদিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১৩০ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ৩৪০ হেক্টর।
কৃষি বিভাগ ও উৎপাদনকারীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, জেলায় এবছর হেক্টরপ্রতি তরমুজ উৎপাদন হয়েছে ৫৫ টন। সেই হিসেবে জেলায় মোট উৎপাদন হবে ৩ লাখ ৫৫৮০ টন।
পুরো জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভোলার তরমুজ চলে যাচ্ছে বরিশাল-ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর , বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
ভোলার মাঝের চরের কৃষক শাহাবউদ্দিন জানান, চলতি বছর তিনি ২৫ একর জমিতে তরমুজ করেন । এতে তার খরচ হয়েছে ১২ লাখ টাকা। তিনি ৩৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও জানান , এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজ লাল টুকটুকেসহ বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়েছে।
ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চর কালেঙ্গার তরমুজ চাষী ইসুফ মাঝি জানান, তিনি ১ একর জমি থেকে ইতোমধ্যেই ৬৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। আরও প্রায় ১ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রির কথা চলছে।
পাইকারী ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, তরমুজের সাইজ বড় ও রোগ বালাই মুক্ত হওয়ায় তারাও ভাল দাম পাচ্ছেন। গরম আবহাওয়ার কারণে ক্রেতার চাহিদা তরমুজের প্রতি বেশি।
সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোস্তফা কামাল বলেন, তরমুজের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ,ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস। তরমুজের প্রায় ৯৬ ভাগ জল। রয়েছে প্রচুর খনিজ লবণ। প্রচ- গরমে শরীরের লবণ পানির ঘাটতি দূর করতে তরমুজ বেশ উপাদেয় ফল।
ভোলা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, বিগত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তরমুজ চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলো। সে জন্য এবার চাষ কম হয়েছে।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, অনুকূল পরিবেশ, ভালো বাজারব্যবস্থাপনা আর বৃষ্টি না হওয়ায় এ বছর তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। দাম রয়েছে সন্তোষজনক। সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে ভোলার কৃষকরা আরও বেশি তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হবে।