আমার দেশ • নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • লিড ৩
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে আবারও নগদ সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ
সোহেল রহমান : বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় অভিঘাত শুরু হয়েছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যেই সপ্তাহব্যাপী কঠোর ‘লক-ডাউন’ ঘোষণা করেছে সরকার। যা এখন চলমান রয়েছে। ‘লক-ডাউন’-এর কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের এ ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে গত বছরের মতো ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে আবারও ২ হাজার ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদানের চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। এতে সরকারের ব্যয় হবে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত বছর মে ও জুনে প্রথমবারের মতো করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। যদিও লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩৫ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রা ৫০ লাখ পরিবার হলেও প্রাথমিকভাবে ৩৫ লাখ দরিদ্র পরিবারকে এই নগদ সহায়তা দেয়া হবে।
অর্থ বিভাগ সূত্রমতে, দেশে এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। কঠোর লক-ডাউন দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই লক-ডাউনের মেয়াদ ৭ দিন বলা হলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ১৪ দিন করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ করাসহ সাধারণ মানুষের চলাচলেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ লক-ডাউনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দরিদ্র মানুষ। কারণ এসময় তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। এই মানুষদেরই কিছু সাশ্রয় দিতে গতবারের মতো এবার আড়াই হাজার করে নগদ সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। গতবার যারা এই সহায়তা পেয়েছে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তারা এবারও এই সহায়তা পাবেন।
সূত্র জানায়, আর্থিক সহায়তা পাওয়ার তালিকা রয়েছেÑ রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক, হকারসহ নানা পেশার মানুষ।
জানা গেছে, মূলত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে পরিবারগুলোকে টাকা দেয়া হবে। এর মধ্যে বিকাশ, রকেট, নগদের মাধ্যমে এই অর্থ দেয়া হবে। অর্থাৎ নগদ সহায়তা হলেও কাউকে নগদে টাকা দেয়া হবে না। এক্ষেত্রে এমএফএসগুলো বড় আকারের ভর্তুকি দেবে সরকারকে। টাকা পৌঁছানোর জন্য এমএফএসগুলো পাবে প্রতি হাজারে মাত্র ৬ টাকা। হাজারে ৬ টাকা হিসাবেই পৌঁছানোর মোট খরচ দাঁড়ায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এ টাকা সরকার বহন করবে। পরিবারগুলোর কোনো টাকা দিতে হবে না। তারা পুরো আড়াই হাজার টাকাই পাবে।
প্রসঙ্গত: গত বছর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ৫০ লাখ দুস্থ মানুষের তালিকা চাওয়া হয়। কিন্তু তাদের পাঠানো ৫০ লাখ দুঃস্থ মানুষের মধ্যে ২৮ লাখ মানুষের তালিকাই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। ফলে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রথম ধাপে ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৬ পরিবারে নগদসহায়তা পাঠাতে সক্ষম হয়। এতে সরকারের খরচ হয়েছে ৪০৪ কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ত্রুটিপূর্ণ তালিকার জন্য বাকি ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪৪ পরিবারে নগদ সহায়তা পাঠানো স্থগিত রাখা হয়।