জলাবদ্ধতা নিরসনে জমি পাকাকরণ বন্ধ করতে হবে
স্থপতি ইকবাল হাবিব
দীর্ঘদিনের ভূমি উন্নয়ন নীতিমালার তোরপোর করা অর্থাৎ প্রতিপালন না করাই জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। সত্যিকার অর্থে নগরীর খাল ও জলাশয়গুলোকে উন্মুক্ত না রাখা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি। কোনো না কোনোভাবে ভূমি উন্নয়ন নীতিমালার অনুশাসনগুলোকে উপহাস করার মধ্য দিয়ে আজ এ পরিণতি। এ পরিণতির আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন: ব্যক্তিপর্যায়ে সমস্যা তৈরি করার ক্ষেত্রে অসচেতনতা এবং এর প্রতিকারের ব্যাপারে ততোধিক অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমে নিরুৎসাহিত হওয়া। এটা ব্যক্তিপর্যায় থেকে সংগঠন পর্যায় পর্যন্ত। অর্থাৎ জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যাপারে যে সংগঠন রয়েছে, তারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করা ছাড়া সত্যিকার অর্থে নিরসনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ না করা কারণেই আজকের পরিণতি। আজকের পরিণতির আরও একটি কারণ হচ্ছে, আমরা এ নগরীকে প্রায় পাকা করে ফেলেছি। যখন বৃষ্টি হয় ৪০ শতাংশের মতো পানি সঞ্চিত হয়ে মাটির নিচে যায়। আমরা সড়ক থেকে শুরু করে পাশের সব কিছুকে ক্রমাগত পাকা করে ফেলেছি। রান অব ওয়াটার হয় বাকি ৬০ শতাংশ পানি; যেটা গড়িয়ে গড়িয়ে নদীতে খালে চলে যায়। এটার পরিমাণ বাড়াতে বাড়াতে পরিমাণ ৮০ শতাংশ হয়েছে। ফলে অল্প পরিমাণ বৃষ্টিতে বা একই পরিমাণ বৃষ্টিতে আগে যেখানে রান অব ওয়াটারের পরিমাণ যা হতো, তা এখন অনেক বেশি বেড়ে গেছে। একইভাবে আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রচ- রকমের পারস্পরিক অসংগতিপূর্ণ, অসমন্বিত এবং একীভূতকরণে বাঁধা সৃষ্টি করছে। এসব কারণে আমরা সমাধানে চারটি ‘স’যুক্ত করে একটি প্রকল্পের কথা বলেছি, যেটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, পূর্তমন্ত্রী এবং পানিসম্পদ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে মেয়রদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন। সে চার ‘স’যুক্ত শব্দ হচ্ছেÑ সার্বিকতানির্ভর, সময়নির্ভর, সমন্বিত এবং জনসম্পৃক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে। সে উদ্যোগ অবশ্যই জনপ্রতিনিধিত্বশীল কোনো একটি ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে কার্যকর করা দরকার। যাতে এ জনসম্পৃক্ততা রাজনৈতিক অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয় এবং সে কারণেই আমরা মনে করেছিলাম সিটি করপোরেশনের পক্ষেই এটা করা সম্ভব।
পরিচিতি : নগরবিদ
মতামত গ্রহণ : খন্দকার আলমগীর হোসাইন
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ