প্রার্থীদের হলফনামা বাতিলের প্রস্তাব হতাশাজনক ও অনভিপ্রেত : সুজন
তানভীর আহমেদ : হলফনামার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধান বাতিল চেয়ে একটি দল যে অভিমত প্রকাশ করেছে তা হতাশাজনক ও অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘নির্বাচনে প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত হলফনামার বিধান বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে’ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, একটি রাজনৈতিক দল কর্তৃক হলফনামার বিধান বাতিল চাওয়ার প্রস্তাব হতাশাজনক ও অনভিপ্রেত। কারণ এ দাবি ভোটারের বাক্-স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের অন্তরায় এবং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য অশনি সংকেত। প্রার্থীদের হলফনামা দেয়ার নির্দেশ উচ্চ আদালতের। এটি বাতিল করার ক্ষমতা কারো নেই। কারণ এই প্রস্তাব ভোটারের মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কমিশন তাদের রোডম্যাপ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের সঙ্গে সংলাপও প্রায় শেষ করেছে। সংলাপে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশও এসেছে। নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত, অর্থাৎ সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে এ বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটি বাতিল করার ক্ষমতা কারোরই নেই, এমনকি নির্বাচন কমিশনেরও।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার আমাদের দেশে খুব সহজেই প্রতিষ্ঠা হয়নি। আদালতের নির্দেশও আপনা আপনি আসেনি। এর পেছনে সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যে ইতিহাস অনেক ক্ষেত্রে বেদনাদায়ক ও ন্যাক্কারজনক। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন ও নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে পরিচ্ছন্ন ও কলুষমুক্ত করতে হলে হলফনামার বিধান আরও কিভাবে কার্যকর করা যায় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে উদ্যোগী হতে হবে।
সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বলেন, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২০০৫ সালের ২৪ মে আব্দুল মোনেম চৌধুরী ও অন্যান্য বনাম বাংলাদেশ মামলায় এক যুগান্তকারী রায় দেন। রায়ে আদালত নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের কাছ থেকে ৮ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে গণমাধ্যমের সহায়তায় জনগণকে জানানোর নির্দেশ প্রদান করেন। অথচ একটি রাজনৈতিক দল কেন এই বিধান বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে তা বোধগম্য নয়। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ