বাজার সংকটে ফুল চাষের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না
মতিনুজ্জামান মিটু : বাজার সংকটে বাংলাদেশে ফুল চাষের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না। ঝুঁকির মুখে ফুলের চাষ ও উৎপাদন। এমনটাই জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং এর উপ-পরিচালক (ফুল ও ফল) এ. কে এম মনিরুল আলম।
এক আলাপচারিতায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাজারের ওপর নির্ভর করে দেশে ব্যাপকভাবে ফুল চাষ সম্ভব নয়। বাংলাদেশে ফুলের ব্যবহার সর্বনিম্ন। বাজার সংকটে চাষীরা ফুল চাষ করে পোষাতে পারছে না। অনেক ক্ষেত্রেই উৎপাদন খরচ উঠাতে পারছে না। চীন থেকে অর্কিড এনে চাষ করে ৩ বছর যাবত হতাসায় ভুগছে ভালুকার এক ফুল চাষী। যশোরের গদখালির ফুল চাষীরা জানিয়েছেন, তারা খরচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারছে না। নানা সচেতন মূলক উদ্যোগ নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে ফুল ব্যবহার বাড়ানো না গেলে ফুল চাষের হতাসা সহসাই কাটবে না। সেই সঙ্গে বাংলাদেশি ফুল বিক্রির জন্য বিদেশি বাজারও খুঁজে বের করতে হবে। হর্টিকালচার উইং এর সাবেক পরিচালক সুনিল চন্দ্র ধর বলেন, কিছু কিছু দিবস ও অনুষ্ঠানাদি ছাড়া বাংলাদেশে নিয়মিত ফুল ব্যবহার হয় না। বাংলাদেশে প্রতিদিন যে ফুল ব্যবহৃত হয় তা খুবই সামান্য। এতো ছোট ক্ষেত্রের ওপর ভর করে এদেশে ফুল চাষের ব্যাপক কোনো সুযোগ নেই। ভারতে পুঁজা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে প্রতিদিন প্রচুর ফুল ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এখানে তা হয় না। ফুল প্রতিদিন উৎপন্ন হয়। তাই প্রতিদিনই ফুল বিক্রি হওয়া দরকার। তা না হলে চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তা ছাড়া ফুল সংরক্ষণ ও বিপনণের নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এখানে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৫-২০১৬ সালে দেশে ফুলের চাষ ও উৎপাদন কমেছে। এ বছর ২ হাজার ২৭৬ দশমিক ৪৩ হেক্টর জমি চাষ করে ফুল উৎপাদন হয়েছে ২৯৮ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৭৩৬টি। ২০১৪-২০১৫ সালে ২ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমি চাষ করে ফুল উৎপাদন হয় ২৯৪ কোটি ১৪ হাজার ৭৭৬টি। ২০১৩-২০১৪ সালে ২ হাজার ৩১৮ দশমিক ৪৪ হেক্টরে ২৭৩ কোটি ৩৪ লাখ ৮ হাজার ৩১৩টি এবং ২০১২-২০১৩ সালে ২ হাজার ২৫০ হেক্টরে ফুল উৎপাদন হয় ২৬৪ কোটি ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২৪০টি। সম্পাদনা : তরিকুল ইসলাম সুমন