প্রশ্নফাঁসের পুনর্রাবৃত্তি শিক্ষামন্ত্রীর ব্যর্থতা
ড. অজয় রায় : একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছেই। কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রশ্নফাঁস যেনো অবাধ্য সন্তানের মতো হয়ে গেছে। কারো কথা শুনছে না, মানছে না। মনে হচ্ছে, অভিভাবকহীন এক সন্তান। শিক্ষামন্ত্রীর এতো তোড় জোড়ের পরেও প্রশ্নফাঁস যেনো সমুদ্রের বাধাহীন ঢেউয়ের মত করে উত্তাল গতিতে বইছে। খবরের কাগজের প্রথম পাতাজুড়ে ধারাবাহিকভাবে যখন প্রশ্নফাঁসের সংবাদ দেখতে হয়, তখন একজন শিক্ষাবিদ হিসাবে মন মুচড়ে ওঠে, আনমনা হয়ে যাই। ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত হই। কেননা, প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি এখন আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভাবার কোনো ধরনের সুযোগ নেই। আর প্রশ্নফাঁস পিতামাতাহীন অবাধ্য সন্তান নয়। কেননা, দায়িত্বশীল মানুষদের হাতে প্রশ্ন প্রনয়ণ হয়। যাদেরকে প্রশ্ন কর্তা বলা হয়। এরপর প্রশ্ন মডারেট করা হয়, প্রিন্টিং করা হয়। এসকল কাজের প্রত্যেকটা ধাপে ধাপে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন। এই ধাপ গুলোই প্রশ্নফাঁসের উৎস। এসকল ব্যক্তিদের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা যাচ্ছে না। যারা প্রশ্ন তৈরি করে, মডারেট করে, প্রিন্টিং করে, গচ্ছিত রাখে, প্রধানত এসকল ব্যক্তিরাই প্রশ্নফাঁসের জন্য দায়ী। তারপর এই সকল দায় গিয়ে পড়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপর। বিশেষ করে শিক্ষামন্ত্রীর কাধে সব দায় বর্তায়। কোনোভাবেই এই দায় থেকে শিক্ষামন্ত্রী মুক্তি পেতে পারেন না। কেননা, শিক্ষামন্ত্রীই এদের সবার কর্তা ব্যক্তি। প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত বাক্তিদের খুঁজে বের করে যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা যাবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে, প্রশ্নফাঁসের আসল হোতাদের কখনোই খুঁজে বের করতে দেখি না। যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে বা সরবরাহকারীদের ধরে শাস্তি দিচ্ছে, শুধু এমন ধরনের ব্যবস্থা প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারবে না। কেননা, সমস্যার গোড়ায় গলধ রেখে মাথা পরিস্কার করা অসম্ভব।
পরিচিতি : শিক্ষাবিদ
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : মোহামামদ আবদুল অদুদ