আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিরাপদ নয়
আরিফুর রহমান তুহিন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার প্রত্যাবাসনে পর্যবেক্ষণ জরুরী বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ছাড়া রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিরাপদ নয়। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে ঢাকা-নেপিদো সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনগুলো একথা জানায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শরণার্থী অধিকার বিষয়ক পরিচালক বিল ফ্রেলিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, রোহিঙ্গাদের ভস্ম হয়ে যাওয়া গ্রামগুলোতে বার্মা এখন তাদের উন্মুক্ত বাহুডোরে ফেরত নেবে এমন ধারণা হাস্যকর। পাবলিক রিলেশনের একটি স্টান্টবাজিতে সমর্থন না দিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের এটা স্পষ্ট করা উচিত যে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ছাড়া কোন প্রত্যাবাসন হবে না। তিনি আরো জানান, ফেরত যাওয়া ব্যক্তিদের ক্যাম্পে রাখার ধারণার ইতি টানতে হবে। এছাড়া, জমিজমা ফেরত দেয়া এবং ধবংস করা বাড়িঘর, গ্রাম পূনর্গঠনসহ আরো অনেক শর্ত দিতে হবে।
ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র আন্দ্রে মাহেসিচ বলেন, স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআর এর সম্পৃক্ততা থাকাটা প্রচলিত একটি চর্চা। যে কোনও ধরণের প্রত্যাবাসন চুক্তিকে আন্তর্জাতিক মানদ- মানা হচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করে ইউএনএইচসিআর। তিনি আরো জানান, তারা এখনও চুক্তির বিস্তারিত দেখেন নি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের শরণার্থী ও অভিবাসী অধিকার বিষয়ক পরিচালক চারমেইন মোহাম্মদ বলেন, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই আলোচনা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা রাখা হয়েছে। আর যখন কিনা বাংলাদেশে এখনও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল অব্যাহত রয়েছে তখন তাদের ফেরতের চুক্তি ‘প্রিম্যাচিওর’।
চীন বলেছে, তারা প্রত্যাবাসন নিয়ে হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানায়। তবে, মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এখনও প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে কয়েক শ রোহিঙ্গা। সংঘাতের মুখে, ক্ষুধায় কাতর হয়ে আর আতঙ্গে মিয়ানমার থেকে পালাচ্ছে তারা। স্বতন্ত্র তথ্যসূত্রের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনে এখন অবশিষ্ট রয়েছে সম্ভবত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে দু’মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর করা বলা হয়েছে। তবে চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সময় অবশ্যই পর্যবেক্ষক রাখতে হবে, এমন মন্তব্য প্রায় সব মানবাধীকার সংস্থাগুলোর। সম্পাদনা: তরিকুল ইসলাম সুমন