সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সম্পর্কে দায়িত্বহীনতার অভিযোগই বেশি
রিকু আমির : দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে সবচেয়ে বেশি সমস্যা-অভিযোগ আসে দায়িত্বহীনতা সম্পর্কে। মোবাইল ফোন এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান থেকে এসব অভিযোগ পাঠান রোগী, রোগীর স্বজন এবং দর্শনার্থী। দায়িত্বহীনতা ছাড়াও নানা ধরণের সমস্যা-অভিযোগ আসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযোগ কেন্দ্রে। বিগত ৫ বছরের (২০১২ থেকে ২০১৬) পরিসংখ্যান অনুযায়ী- দায়িত্বহীনতার সমস্যা-অভিযোগ এসেছে যথাক্রমে ৪৩.৬৪, ৬৫.২২, ৫৬.১৭, ৬৬.২২, ৬২.৩৮ শতাংশ। তবে ২০১৭ সালে (অক্টোবর পর্যন্ত) অভিযোগ আসার সংখ্যা কমে ১০.৬৪ শতাংশে নেমে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, সেবাগ্রহীতারা এসব অভিযোগ সরাসরি করেন বলে অভিযোগগুলোকে গুরুত্বসহ দেখাশোনা করা হয়। এজন্যই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে শুধু দায়িত্বহীনতা নয়, সব ধরণের অভিযোগ-সমস্যা হ্রাস পাচ্ছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোবাইল ফোন মেসেজের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা-অভিযোগ আসার পরিমাণ বেড়েছে। একইসঙ্গে সমাধানের সংখ্যাও বেড়েছে। ২০১২ সালের অক্টোবরে ৪০টি সমস্যা-অভিযোগ আসলেও ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩০-এ ঠেকেছে। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ৯৩টি সমস্যা-অভিযোগ আসলেও ২০১৭ সালে ঠেকেছে ৪৯৮- এ। সারাদেশ থেকে আসা সমস্যা-অভিযোগগুলোকে ১৩ ভাগে ভাগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব হচ্ছে- আচার-আচরণ, ভাল কাজের জন্য সাধুবাদ প্রদান, দুর্নীতি, সমতা-বৈষম্য, খাদ্যের মান, দায়িত্বহীনতা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, নি¤œমানের ব্যবস্থাপনা, নিয়মানুবর্তিতা, নিরাপত্তা, সেবা এবং পানি-পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং অন্যান্য। ২০১৭ সালে আসা সমস্যা-অভিযোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে নি¤œমানের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে, প্রায় ১৫ শতাংশ। সবচেয়ে কম সমস্যা-অভিযোগ নিরাপত্তা এবং সমতা-বৈষম্য সম্পর্কে।
এদিকে ২০১২ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সমস্যা-অভিযোগ এসেছে ২০০-২৫০ শয্যার হাসপাতাল থেকে, ৩০.৫৬ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে- স্পেশাল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে, ১৮.০৯ শতাংশ। তৃতীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ১০.৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সমস্যা-অভিযোগ সমাধানে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে আশ্বাসই পাওয়া যেত বেশি। তবে ২০১৭ সালে সমস্যা-অভিযোগ সমাধানের হার বেড়েছে। ২০১৭ সালে সমাধানের আশ্বাস পাওয়া গেছে এক হাজার ৩৩৫টি, সমাধান হয়েছে এক হাজার ৫৫২টি সমস্যা-অভিযোগ। অভিযোগ ও সমস্যা সমাধানে কাজ করা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান- সব সমস্যা-অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা যায় না। কিছু স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব নয়। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ