৫ হাজার উইঘুর ‘সন্ত্রাসী’র খোঁজে সিরিয়ায় ‘স্পেশাল ফোর্স’ পাঠাচ্ছে চীন
রাশিদ রিয়াজ : চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানদের মৌলিক অধিকার খর্ব ও তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ বহু পুরোনো। এবার সিরিয়ায় বিশেষ বাহিনী পাঠাচ্ছেন চীন। দেশটির ভাষায় সেখানে ৫ হাজার উইঘুর মুসলমান সন্ত্রাসী রয়েছে যারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। চীনের এই সংখ্যালঘু মুসলমানদের অনেকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও তুরস্ক হয়ে অবৈধ অভিবাসনের মাধ্যমে সিরিয়ায় পৌঁছেছে বলে বলা হচ্ছে।
পশ্চিম সিরিয়ায় মায়মিন রুশ সামরিক ঘাঁটি থেকে বলা হচ্ছে চীনের ওই স্পেশাল ফোর্সের সেনারা ইসলামিক স্টেট তুর্কিস্তানের মোকাবেলা করবে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের আশেপাশের এলাকায় ইসলামিক স্টেট তুর্কিস্তানের সন্ত্রাসীরা সক্রিয় রয়েছে। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে দেশটির স্পেশাল ফোর্সে দুটি ইউনিট ‘টাইগারস অব সাইবেরিয়া’ ও ‘নাইট টাইগারস’কে সিরিয়ায় পাঠানো হচ্ছে। তারা ইসলামিক স্টেট তুর্কিস্তানের মোকাবেলা ছাড়াও সিরিয়া সরকারকে সন্ত্রাস দমনে সহায়তা করবে। এ খবর দিয়েছে আশারক আল-আওসাত।
ধারণা করা হয় ইসলামিক এস্টেট তুর্কিস্তান আন্দোলনে আড়াই হাজার সন্ত্রাসী তৎপর রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এ সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করেছে। পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালেবানের সঙ্গেও ইসলামিক এস্টেট তুর্কিস্তানের যোগাযোগের কারণে দেশটির ওপর চীনও ওই সংগঠনটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে আসছে।
মিডেল ইস্ট মনিটর গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানায়, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা বোথাইনা শাবানের সঙ্গে এক বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’ দেশটির সরকারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশংসা করেন। এর আগে ২০১৫ সালে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় চীনের ৫ হাজার সেনা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয়। সিরিয়ায় নৌ ও বিমান ঘাঁটিতেও এসব চীনাসেনা মোতায়েন করা হয়।
সিরিয়া সরকারের পক্ষে চীন, রাশিয়ার সাথে অবস্থান নিয়েছে এবং এ দুটি দেশ জাতিসংঘে তাদের ভেটো ক্ষমতারও প্রয়োগ করছে। গত ৬ বছর ধরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলে আসছে এবং দেশটির সরকারের পতনে সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশ পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইসরায়েল দেশটিতে বেশ কয়েকবার বিমান হামলা চালিয়েছে এবং ইরান সেখানে কোনো সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করলে সরাসরি হামলার হুমকি দিচ্ছে। তবে ইরান বলছে সন্ত্রাস প্রতিরোধে সিরিয়া সরকারের অনুরোধেই দেশটি সাহায্য করছে।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অন্তত ৫ লাখ মানুষ মারা যায়। সিরিয়া ছাড়াও আফ্রিকার জিবোতি, ইয়েমেন, সোমালিয়া ও পাকিস্তানে বন্দর নির্মাণ ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিচ্ছে চীন। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণে জোর দিয়েছেন যাতে বিদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন তৎপরতার সঙ্গে আরো বেশি অংশ নেওয়া সম্ভব হয়। সম্পাদনা : ফাতেমা আহমেদ