রাজনীতিতে দুর্নীতি
ওয়াসিম ফারুক : আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে রাজনীতি আর দুর্নীতি একে অপরের সম্পুরক হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি বর্তমান সময়ের আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অনেকেরই ধারণা, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা যদি দুর্নীতিতে না জড়ান বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের দুর্নীতি প্রায় অধিকাংশই বন্ধ হয়ে যাবে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে থাকেন রাজনীতিবিদরা। তাই মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, এমন কি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পর্যন্ত রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। কোনো এক জন মন্ত্রী যদি দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হন, সে ক্ষেত্রে ঐ মন্ত্রনালয়ের সচিবের পক্ষে দুর্নীতি করা তেমন সম্ভব হবে না। আর সচিবের পক্ষে যদি দুর্নীতি করা সম্ভব না হয়, তার অধীনস্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীরই সাহস হবে না দুর্নীতি করার। আজ আমাদের রাজনীতি আর রাজনীতিবীদদের হাতে নেই। আমাদের দেশের রাজনীতি আজ কুক্ষিগত হয়ে হয়ে আছে ব্যবসায়ীদের হাতে। হাতেগনা দুই-চার জন পেশাদার রাজনীতিবিদ রাজনীতির সাথে আছেন তারাও অর্থ-বিত্তের লোভে ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ীদের সহযোগি হয়েছেন। বর্তমান সংসদের অধিকাংশ সদস্যই ব্যবসায়ী। প্রত্যেক সাংসদই কোটিপতি, কেউ কেউ অতিকায় ধনী। শুধু এবারের সংসদই নয়, বিগত কয়েকটি সংসদেই চিত্র ছিল অভিন্ন। এ বছরের জানুয়ারির প্রথমে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেছিলেন ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। রাজনীতিবিদরা যদি সত্যিকার অর্থে চান তাহলে যে কোনো মুহূর্তে দুর্নীতি রোধ করা যায়।’ তাই স্বাভাবিক ভাবেই বলতে চাই আজ আমাদের দেশের প্রতিটি শিরা-উপশিরায় যে দুর্নীতির রক্তপ্রবাহিত হচ্ছে তার বিশেষ আশ্রয় ও প্রশ্রয় দাতা ও লাভবান আমাদের দেশের তথাকথিত রাজনীতিবিদরা। কিন্তু রাজনীতি যে আজ আর রাজনীতিবিদদের হাতে নাই এটা ও সত্য। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের দিয়ে কখনো দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করা সম্ভব নয়।
লেখক : ওয়াসিম ফারুক, কলামিস্ট
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ