গাজীপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতারের অভিযোগ
মো. মিলটন খন্দকার, গাজীপুর: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের এক দিন আগে গতকাল নগরজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিকের প্রধান এজেন্ট ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সোহরাব উদ্দিন গতকাল সোমবার দুপুরে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ সংক্রান্ত দুটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশের অভিযানের মুখে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রোববার রাতে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনার সাথে জড়িত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেফতারকৃতদের কারোর বিরুদ্ধেই কোন মামলা নেই।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. মাজহারুল আলম জানান, সিটি কর্পোরেশনের সকল অঞ্চলে ২০ দলীয় জোটের সকল নেতাকর্মী ও সমর্থকের বাসা-বাড়িতে পুলিশ প্রতিদিনই হানা দিচ্ছে। বিশেষ করে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী-সমর্থকদের তালিকা ধরে টার্গেট গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে ধানের শীষের মিডিয়া সেল জানায়, পুলিশের গ্রেফতার অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের কারণ হলো, যাদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে কোন মামলা ছিল না তাদেরকে ধরে ভিন্ন জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। দুই/তিন দিন পর কাউকে টাঙ্গাইল, কাউকে নারায়ণগঞ্জ ও কাউকে ঢাকার জেলখানায় পাওয়া যাচ্ছে। ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের এই গ্রেফতার অভিযানে গাজীপুর ডিবি পুলিশের সাথে জেলার সকল থানা ও পাশ^বর্তী জেলা সমূহের পুলিশ নামানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে পুলিশ চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বাসন অঞ্চল ধানের শীষের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সাবেক বাসন ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরীর বাড়ির গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে। এসময় তাকে না পেয়ে দারোয়ান ও পরিবারের সদস্যদের কাছে পুলিশ এই বলে হুমকি দিয়ে যায় যে, ‘ আগামীকাল জাহাঙ্গীরের সাথে তাকে (আলাউদ্দিনকে) দেখা করতে বলবি, দেখা না করলে তার পরিণতি খারাপ হবে। আর যদি দেখা না করে তাহলে ঘর থেকে যেন বের না হয়’। টঙ্গী থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভেন্ডার ও মহানগর ছাত্রদল নেতা সিরাজুল ইসলাম সাথীর বাসায় ২৩ জুন রাতে হানা দেয় ডিবি ও থানা পুলিশ। পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসায় না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে যায়, নির্বাচনের আগে যেন এলাকায় না আসে। পুলিশের এই অভিযানে যুক্ত হয়েছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী। সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাইরে পাশের এলাকা সমূহের যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সমন্বয়ে গঠিত করা হয়েছে অভিযান পরিচালনা কমিটি। তারা পুলিশের সাথে মুখোশ পড়ে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে হানা দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন গত ২০ জুন প্রার্থীদের ডেকে মতবিনিময় সভায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার কোন বাস্তবায়ন হচ্ছে না।