জাতিসংঘ-বিশ্বব্যাংকের প্রধানের আসন্ন সফর নিয়ে ব্যস্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
তরিকুল ইসলাম : জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও সহযোগী সংস্থা প্রধানদের আসন্ন সফর নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত রয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হাই প্রোফাইল এ ভিজিট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। আগামি ৩০ জুন আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরা।
রোববার ঢাকায় এসেছেন জাতিসংঘ সদর দপ্তরের শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেল জোঁ পিয়েরে ল্যাক্রোয়া-এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। এসেই রোববার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, তিনবাহিনীর প্রধান ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেরেছেন। প্রতিনিধিদলটির এ সফর শান্তিরক্ষা মিশনে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ভূমিকা ও অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখতে তিন দিনের সফরে আগামী ৩০ জুন আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। থাকবেন দুই জুলাই পর্যন্ত। এ সময় তারা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন সংস্থা দুটির প্রধান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব এর আগে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান থাকাকালে ২০০৮ সালে একবার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসেছিলেন। কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে এই প্রথম সফরে আসছেন তিনি। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের এটি দ্বিতীয় সফর। এর আগে বিশ্ব দারিদ্র্য নিরসন দিবস পালন উপলক্ষে গত বছর ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। ঢাকায় আসার পর গুতেরেস ও জিম ইয়ং কিম কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। তারা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
কক্সবাজারে আইসিআরসি’র কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবেন আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরা। তিনি আগামী ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করবেন। মিয়ানমারে ২০১৭ সালের আগস্টের সহিংসতার পর রাখাইন থেকে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য-সেবা, শিক্ষা এবং জীবনধারণের অন্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের সংস্থান করাটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বৈশ্বিক ফোরাম ও সহযোগি সংস্থা প্রধানদের এ সময়ে বাংলাদেশ সফর বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও দীর্ঘমেয়াদে তাদের ভরণপোষণ ও সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা বাংলাদেশের একার পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় তাদের পাশে বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার এগিয়ে আসাটা সংকট থেকে উত্তরণে সহায়তা করবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপগুলো তাদের কাছে তুলো ধরা হবে।