এলএনজির ওপর দুই ধাপে সার্ভিস চার্জ বসাতে চায় পেট্রোবাংলা
স্বপ্না চক্রবর্তী : তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) উপর দুই ধাপে সার্ভিস চার্জ বসানোর চেষ্টা করছে পেট্রোবাংলা। নিজের মুনাফার পাশাপাশি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (আরপিজিসিএল) এর হিস্যাও রাখা হয়েছে। এতে করে এলএনজি বিক্রির সময় পৃথকভাবে দুই প্রতিষ্ঠানই লভ্যাংশ যোগ করে বিক্রি মূল্য ধরেছে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। গতকাল সোমবার রাজধানীর টিসিবি অডিটোরিয়ামে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড (আরপিজিসিএল) এবং পেট্রোবাংলার প্রস্তাবের ওপর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে গণশুনানীতে এসব কথা বলেন তারা।
শুনানিতে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম, বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য রহমান মুর্শেদ, সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য আব্দুল আজিজ খান উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কমিশনের সাবেক একজন সদস্য বলেন, মূল্য নির্ধারণ পর্যায়ে আপস্ট্রিম (উৎপাদন) পর্যায়ে গ্যাসের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা কমিশনের হাতে নেই। সরকার সময়ে সময়ে এই মূল্য নির্ধারন করে থাকে। কমিশন উৎপাদন পর্যায়ের পরে সঞ্চালন এবং বিতরণ পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। অর্থাৎ সরাসরি ভোক্তা যে দরে গ্যাস পায় তার মূল্য কমিশন নির্ধারণ করে। কিন্তু বিতরণ কোম্পানীগুলো পেট্রোবাংলার কাছ থেকে যে গ্যাস ক্রয় করে তার দর সরকার নির্ধারণ করে।
বিতরণ পর্যায়ে এলএনজি আসার ক্ষেত্রে এ মূল্যবৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করার জন্যই কমিশন পেট্রোবাংলা এবং আরপিজিসিএলকে ডেকেছিল। বিষয়টির শুনানিতে দুই পক্ষ প্রস্তাব দিয়েছে তাতে উভয়ের লভ্যাংশ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। শুধুমাত্র এলএনজির উপর প্রতি ঘনমিটারে দশমিক ৪০টাকা করে আরপিজিসিএল লভ্যাংশ ধরেছে। একই ভাবে সঞ্চালন, বিতরণ এবং পেট্রোবাংলার মার্জিন মিলিয়ে এলএনজির বিক্রয়মূল্য আরো দশমিক ৮০টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা। অর্থাৎ একই গ্যাসের উপর দুই ধাপে লাভ হিসেব করা হয়েছে।
শুনানিতে এক প্রস্তাবে বলা হয়, এলএনজি আমদানির বিষয়ে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ৩টি আঞ্চলিক অফিস প্রতিষ্ঠা করা হবে। এসব অফিসের জন্য কক্সবাজারে শূণ্য দশমিক ৩৫একর ও মহেশখালীতে ২দশমিক ৫একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।
এদিকে এলএনজি স্থাপনাগুলো গভীর সমুদ্রে ও প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়া যাতয়াতের জন্য সমুদ্র চলাচল উপযোগী স্পীড বোটসহ অন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন কিনতে হবে। তারা জানায়, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরঙ্গ ও কৌয়ার বিল মৌজায় স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মানে ৫০ হেক্টর জমি ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। ভূমি অধিগ্রহণের সময় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করা হবে। এইসব যুক্তি বিবেচনায় এলএনজি আমদানি ও রি-গ্যাসিফিকেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে এলএনজি আমদানির আপস্ট্রীম ব্যয় হিসেবে আরপিজিসিএলকে প্রতি ঘনমিটারে দশমিক ৪০টাকা লভ্যাংশ শেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।