ফেনীতে কলেজগুলোর লোভনীয় অফার

    শাহজালাল ভূঞা, ফেনী : ফেনী শহরজুড়ে রং-বেরংয়ের পোস্টার-ব্যানারের ছড়াছড়ি। জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের জন্য রয়েছে লোভনীয় অফার। ‘ভর্তি ও শিক্ষা উপকরণ ফ্রি’, ‘শিক্ষা বৃত্তি’, ‘বেতন ফ্রি’- এটা কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন নয়; একাদশ শ্রেণীতে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিজেদের কলেজে আকৃষ্ট করতে এ ধরনের বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে ফেনী শহরের প্রাইভেট কলেজগুলো। শুধু ভর্তি ফি-ই মওকুফ নয় সারাবছর বিনাবেতনে পড়ারও সুযোগ দেয়ার অফার দেয়া হচ্ছে।
    সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ভর্তি করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এভাবেই বিভিন্ন বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে চলেছে। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই শহরের প্রত্যেকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুরু হয় ভর্তির তোড়জোড়। গ্রামাঞ্চলের মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হানা দেয় সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।
    সূত্র জানায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে তিনটি কলেজ যাত্রা শুরু করেছে। এর মধ্যে গ্রীন ল্যান্ড কলেজে প্রতিমাসে ১ হাজার ২শ টাকা শিক্ষাবৃত্তি, ফেনী ন্যাশনাল কলেজে ভর্তি ও শিক্ষা উপকরণ ফ্রি এবং শাহীন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজে রাখা হয়েছে বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ।
    এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে তাল মিলিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও পিছিয়ে নেই। বীকন মডেল কলেজে বেতন ও শিক্ষা উপকরণ ফ্রি ও শিক্ষা বৃত্তি, ফেনী ভিক্টোরিয়া কলেজে মাসিক ১ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি, ফেনী মডেল কলেজে বেতন-বই ফ্রি, ফেনী মহিলা কলেজে বেতন ফ্রি, শহরতলীর পাঁচগাছিয়া এ.জেড খান স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে রয়েছে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। এছাড়া এবারই ফেনী গর্ভমেন্ট কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটকে সরকারি কলেজে উন্নীত করা হয়েছে।
    এখানেও বাণিজ্য বিভাগের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ভর্তি নেয়া হচ্ছে। সবকটি কলেজে প্রতিটি বিভাগে ১শ ৫০ থেকে ২শ আসন রাখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে আবেদনের কথা বলা হলেও অনেকে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করছেন। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানগুলো অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণে শহরে তোরণ নির্মাণ ও ব্যানার-ফেষ্টুন টাঙিয়েছে।
    বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষার্থী এবার ১০টি কলেজে আবেদন করতে পারবে। নানা ধরনের সুযোগ রাখা হলেও জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের প্রথম পছন্দ ফেনী সরকারি কলেজ ও সরকারি জিয়া মহিলা কলেজ হওয়ায় তারা অপর কলেজগুলোর তালিকায় কোনটিকে রাখবে এনিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে।
    ফেনী ন্যাশনাল কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মাঈন উদ্দিন বলেন, বর্তমানে প্রতিযোগিতার যুগে সব প্রতিষ্ঠানই চাইবে তাদের কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে। আর এ জন্য সবাই নিজ নিজ পন্থা অবলম্বন করছেন।
    বীকন মডেল কলেজ’র অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল বাশার রাব্বানী বলেন, প্রতিযোগিতা হলে ভালো। এতে করে অভিভাবকরা যাচাই-বাছাই করে ছেলে-মেয়েদের তাদের পছন্দের কলেজে ভর্তি করাবে।
    জানতে চাইলে ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেতন মওকুফ বা শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেয়ে থাকলে অবশ্যই তা ভাল উদ্যোগ। তবে এসব প্রতিষ্ঠান যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক, নিয়মিত ক্লাস ও সময়মত পরীক্ষা নিতে পারলে ভালো করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন। এক্ষেত্রে অফারের দিকে না তাকিয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, নিজস্ব ক্যাম্পাস ও লেখাপড়ার মান আগে যাচাই করতে হবে।

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *