নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসের চৌধুরী মায়া বজ্রপাতের মতো দুর্যোগ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, বজ্রপাতের কারণ, পূর্বপ্রস্তুতি, বজ্রপাতকালে করণীয় কী, এসব বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। লিফলেট বিতরণ ও গণমাধ্যমের প্রচারণা আরও বাড়াতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর মহাখালীর হোটেল অবকাশে ‘বজ্রপাতে করণীয়’ র্শীষক এক কর্মশালার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ্ কামালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ, একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাজ্জাদ কবির, যুগ্ম-সচিব মো: মোহসীন, জাইকা (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা) কান্ট্রি প্রোগ্রাম কর্মকর্তা নাওকি মাতসুমুরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ বিভাগের পরিচালক অধ্যাাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান ও আর্থ এন্ড এনভারমেন্টাল সাইন্স অনুষদের ডীন ড.এস এম মাকসুদ কামাল প্রমুখ।
মায়া বলেন, বর্তমান সরকার বজ্রপাতে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার পিছু তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা হিসেবে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত এ খাতে ১৮ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার অসচ্ছল হলে তাদেরকে ভিজিএফ কার্ডের আওতায় আনার বিষয়েও তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, বজ্রপাতে ২০১১ সালে ১৭৯, ২০১২ সালে ৩০১ জন, ২০১৩ সালে ২৮৫ জন, ২০১৪ সালে ২১০ জন, এবং ২০১৫ সালে ১৮৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। তিনি বলেন, এ দুর্যোগ এড়াতে এবং বিপুল মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় সরকার ২০১৫ সালের আগষ্ট মাসের ২৭ তারিখে বজ্রপাতকে ‘দুর্যোগ ‘ হিসেবে ঘোষণা করে। মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১০৩ জন মারা যায় বজ্রপাতে। সেইসাথে মাত্র ৪ দিনে ৮১ জন মারা যায়। কর্মশালায় আরো বক্তৃতা করেন, ইউনিভার্সির্টি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী। কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম আরশাদ মোমেন। জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে জাতীয় বিল্ডিং কোডে বজ্রপাত নিরোধক দন্ড স্থাপন বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে সহজ ভাষায় বজ্রপাত সম্পর্কে অধ্যায় রাখতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সচেতন হতে পারে। সম্পদনা : হাসান আরিফ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ বলেন, বজ্রপাত একটি দুর্যোগ। এটি প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সকলস্তরের মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন।
কর্মশালা সূত্রে জানা যায়, এপ্রিল থেকে জুন মাসে বজ্রপাত বেশী হয়। বজ্রপাতের সময়সীমা সাধারণত: ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়।এ সময়টুকু ঘরে অবস্থান করতে হবে।ঘন কালোমেঘ দেখলে ঘরের বাইরে বের হওয়া নিরাপদ নয়। অতি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পায়ে দিয়ে বের হওয়া যাবে। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা,খোলা মাঠ বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না। ধানক্ষেত বা খোলা মাঠে থাকলে থাকলে তাড়াতাড়ি পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়তে হবে।
Amader Orthoneeti is a news portal. it's a voice of people.