ঢাকা কা-ে সুর চড়াল বিজেপি

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী সেবানন্দকে চিঠি পাঠিয়ে খুনের হুমকি দিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হলো শিলিগুড়িতে বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠকে। বলা হল, দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে সেখানকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি জানাবেন। আর দলের অন্য নেতা-কর্মীরা বুথে বুথে সেই দাবিতেই প্রচার আন্দোলন গড়ে তুলবেন। অর্থাৎ, এত দিন যে হিন্দুত্ববাদের সুর ছিল মৃদু, ঢাকা-কা-কে হাতিয়ার করে সেই সুর চড়ালো পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। আনন্দবাজার
    আরএসএসর প্রচারক দিলীপবাবুকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করে এবং একের পর এক সঙ্ঘ নেতাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে বসিয়ে হিন্দুত্ববাদের রাস্তায় হাঁটার ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটে মালদহের বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রে সেই রাস্তাতেই সাফল্য এসেছে। সেখানে কালিয়াচকের ঘটনা নিয়ে বিজেপির প্রচার দলকে একজন বিধায়ক এনে দিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ ঘরোয়া আলোচনায় প্রায়ই মন্তব্য করছেন, এখানে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার আশা তাদের ছাড়তে হবে। অন্তত এবার বিধানসভা ভোটের অভিজ্ঞতা তাই। সেক্ষেত্রে মেরুকরণের রাজনীতিতে হেঁটে সংখ্যাগুরুর ভোট নিজেদের দিকে এককাট্টা করাই লোকসভার ভোটের জন্য অন্যতম কৌশল হওয়া উচিত। রাজ্য কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রস্তাব পাস করানো সেই প্রচেষ্টারই ফসল।
    শিলিগুড়িতে দলের রাজ্য কমিটির দুদিনের বৈঠকের প্রথম দিন উদ্বোধনী ভাষণেই দিলীপবাবু বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। সেখানে যে সংখ্যালঘুরা রয়ে গিয়েছেন, তাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার হচ্ছে। তাদের ধর্ম পালনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মন্দির ভাঙা হচ্ছে। হত্যাও করা হচ্ছে।’ এই প্রেক্ষিতেই জয়প্রকাশ মজুমদারসহ দুজন বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি জানান। এর পর দিলীপবাবু নিজেও হাইকমিশনে যাবেন।
    তবে জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন দিলীপবাবু।’ তিনি জানান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে শনিবার বিধাননগরে সভা হওয়ার কথা। এরপর সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলোয় এবং অন্যত্র বুথওয়ারি সভা করে সচেতনতা গড়া হবে। এ দেশের সব বিদ্বজ্জনের প্রতি দিলীপবাবুর কটাক্ষ, ‘যাঁরা এখানে অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদ করেন, তাঁরা বাংলাদেশের ঘটনাবলিতে নীরব কেন?’ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের এক প্রতিনিধিদল কলকাতায় এসে দিলীপবাবুর সঙ্গে দেখাও করেছেন।
    বাংলাদেশের জামাত বা আইএস জঙ্গিরা সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্যে এসে নানা অপরাধ করছে বলে বিজেপির অভিযোগ। সেই কারণেই খাগড়াগড়, কালিয়াচক ইত্যাদি কা-ের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে এই বৈঠকের রাজনৈতিক প্রস্তাবেও।
    আগামী পঞ্চায়েত ও লোকসভায় সংগঠন ও ভোট বাড়াতে হিন্দুত্ববাদের পাশাপাশিই মোদি সরকারের উন্নয়নকেও ব্যবহার করবে বিজেপি। যে কারণে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নাড্ডা এবং সিদ্ধার্থনাথ এ দিন বৈঠকে মোদি সরকারের দুবছরের সাফল্য ব্যাখ্যা করেন। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *