![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
আসছে ফতোয়া : গুপ্তহত্যা জিহাদ নয়, সন্ত্রাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে শিগগিরই ফতোয়া আসছে। বাংলাদেশের এক লাখেরও বেশি আলেম ওই ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেছেন। এতে বলা হয়েছে, গুপ্তহত্যা জিহাদের অংশ নয়। এটা সন্ত্রাস। আগামী ১৮ জুন তা প্রকাশ করা হবে বলে বার্তা সংস্থা একটি ফরাসী বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ ক্লারিকস-এর প্রধান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। তিনি বলেছেন, সর্বসম্মতভাবে গৃহীত ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছেÑ অমুসলিম, সংখ্যালঘু ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের হত্যা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। আমরা এসব হত্যাকে অবৈধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছি। এএফপির রিপোর্টে আরও বলা হয়, জঙ্গি দমনের অভিযানে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে। এখানকার ধর্মীয় নেতারা মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশে সংখ্যালঘু ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের হত্যার বিরুদ্ধে সোমবার একটি ফতোয়া দিয়েছেন। হিন্দু, খ্রিস্টান, সুফি মুসলিম, অধিকারকর্মী, বিদেশিদের টার্গেট করে তাদের ওপর গত তিন বছরে ভয়াবহ নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসলামি উগ্রবাদীরা। এতে প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছন। গত সপ্তাহে বয়স্ক একজন পুরোহিতের গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া যায় একটি ধানক্ষেত্রে। আশ্রমের এক সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একটি চার্চের কাছে একজন খ্রিস্টান দোকানিকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া হত্যা করা হয়েছে অধিকারকর্মী, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, দুজন বিদেশি নাগরিক ও দুজন সমকামী অধিকারকর্মীকে। এসব হত্যার বেশির ভাগেরই দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট ও আল কায়েদার দক্ষিণ এশিয়া শাখা। কিন্তু সরকার ও পুলিশ বলছে, দেশে এমন কোনো সংগঠনের অস্তিত্ব নেই। হত্যা বন্ধের জন্য দেশব্যাপী জঙ্গি বিরোধী অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এ অভিযানের চতুর্থ দিনে আটক করা হয়েছে ৩১১৫ জনকে। এ নিয়ে মোট আটকের সংখ্যা ১১,৩০৭।
ওদিকে সহিংসতা মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সপ্তাহান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিজন হত্যাকারীকে ধরার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এসব হত্যাকান্ড প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামী ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে বিএনপি বলছে, রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করতে সরকার এসব গ্রেফতার চালাচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ, তাদের ২১০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই ফৌজদারি অপরাধের আসামি। তবে তাদের সঙ্গে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক একেএম শহিদুর রহমান এএফপিকে বলেছেন, গ্রেফতার করা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪৫ জন রয়েছে ইসলামি জঙ্গি গ্রুপের সদস্য। পুলিশ আরও বলেছে, রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ থেকে মাংস কাটার চাপাতি ও জিহাদি বইপত্রসহ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের স্থানীয় দুই সদস্যকে আটক করেছে। বেশিরভাগ হত্যার জন্য আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, দেশেই বেড়ে ওঠা অন্যান্য জঙ্গি গ্রুপ, জামায়াতে মুজাহিদিন বাংলাদেশকে দায়ী করেছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বেশিরভাগ নেতাই উচ্চ শিক্ষিত। সম্প্রতি বন্দুকযুুদ্ধে গুলিতে সন্দেহভাজন ৫ জন ইসলামি উগ্রপন্থি নিহত হওয়ার পর শুরু হয়েছে দমন অভিযান। ধারণা করা হয়, এ মাসে একজন পুলিশ সুপারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকে হত্যার পর এই অভিযান জোরালো হয়েছে। ওই পুলিশ সুপার জেএমবির বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের বেশ কিছু অভিযান চালিয়েছিলেন। মাওলানা মাসউদ বলেছেন, পুলিশের এ অভিযান গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন ইসলামি গ্রুপ হত্যার পক্ষে অবস্থান নেয় তাহলে নতুন ওই ফতোয়ায় তাদের নিন্দা জানানো হবে। এই ফতোয়ায় পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, এসব হত্যাকান্ড কোন জিহাদের অংশ নয়। এটা সন্ত্রাস। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)