আরিফুজ্জামান তুহিন
নির্যাতিতের কোনো ধর্ম নেই, ধর্মীয় পরিচয় তাকে দেখানো একটি বদমায়েশি। মৌলবাদী শক্তি তার ধর্মীয় পরিচয় হাইলাইট করবেন এটাই স্বাভাবিক কিন্তু কমিউনিস্টরা তার বিরোধিতা করবেন, কারণ এটাই লড়াইয়ের মূল নিয়ম। দেশের সব নির্যাতিত মানুষ একটি বর্গ হিসেবে অনুভব করানোই কমিউনিস্টদের কাজ। আর প্রতিক্রিয়াশীলদের কাজ হলো এই একক বর্গকে নানা নামে ভেঙে দেখানো, সংগ্রামে বিভক্তি আনা।
বাংলাদেশে আলবৎ হিন্দুরা নির্যাতিত হচ্ছেন যেমন হচ্ছেন মুসলমানরাও। কিন্তু এরা সবাই মজলুম। এরা না হিন্দু না মুসলিম হিসেবে নির্যাতিত হচ্ছে। এরা সবাই নিপীড়িত বিধায় তাকে নির্যাতন করা সহজ হচ্ছে। হিন্দু হিসেবে যারা থাকতে চান তাদের মুক্তি ঘটবে না, যেমন মুসলিম হিসেবে যারা থাকতে চান তাদেরও আসবে না। ফলে এই ধর্মতাত্ত্বিক পরিচয়ের বাইরের আগে মানুষ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করাতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের সেক্যুলাররা আর ইসলামি মৌলবাদীরা এই একটি জায়গায় এক।
সেক্যুলাররা হিন্দুদের নির্যাতনের কারণ হিসেবে তার ধর্মকে সামনে নিয়ে আসে। তাকে রাজনৈতিক শ্রেণি হিসেবে ভাবতে দেয় না। এতে তার হিন্দু পরিচয়ে মুক্তি যেমন ঘটে না, তেমনি নির্যাতনের মাত্রাও কমে না। বরং তার ধর্মতাত্ত্বিক পরিচয় কারও কারও ভোটের রাজনীতিতে বাক্স ভরে।
অন্যদিকে ইসলামি মৌলবাদীরা মুসলিমদেরকে ধর্মতাত্ত্বিক পরিচয়ের ঘেরাটোপে আবদ্ধ রাখার চেষ্টা করে। তাকে আইসিস বানায়। এতে লাভ হয় যারা নির্যাতন করে সেই পশ্চিমারাই। শোষিতের ঐক্যের একটিই জায়গা, দুনিয়ার সব শোষিত ভাই বোন। এর বাইরে লড়াইয়ের আর কোনো মন্ত্রণা নাই।
ফলে রানা দাশগুপ্তের হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য খ্রীষ্টান একটি জঘন্য সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান যারা মানুষকে হিন্দু বানাতে চায়, যেমন ইসলাম নামের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন