মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে গুপ্তহত্যা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রুখবোই
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আশিক রহমান
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ঢালছে দুর্বৃত্তরা। ঢালার আসলে চেষ্টা করছে। হিন্দু ধর্মীয় সেবক, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম, ইসলামি চিন্তাবিদ, লেখক, প্রকাশক, পুলিশ কর্মকতার স্ত্রী হত্যাÑ প্রায় সব জায়গায়ই আঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। আক্রমণ করেছে। তাদের এই অপতৎপরতা সাময়িক। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে, দীর্ঘমেয়াদে দুর্বৃত্তদের এই অপতৎপরতা কখনোই সফল হবে নাÑ দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন চাকসুর সাবেক ভিপি তারিকুল হক।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের কোনোভাবেই কোনোরকম সুযোগ দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার এটা হতে দেবে না। ১৪ দলীয় জোট এ বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা, গুপ্তহত্যা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রুখবোই। গুপ্তহত্যা অচিরেই বন্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, এই গুপ্তহত্যা সরলভাবে দেখলে হবে না। এখানে গভীর অনেক বিষয় রয়েছে। এ হত্যাকা-গুলো আসলে করানো হচ্ছে। অর্থ বিনিয়োগ হচ্ছে, যাতে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তার ফলে সরকারকে বিব্রত করা যাবে। সরকারকে দুর্বল করতে পারলে সুযোগ নিবে সুযোগ সন্ধানীরা। এই সুযোগের অপেক্ষায় ষড়যন্ত্রকারীরা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তারিকুল হক বলেন, সন্ত্রাসবাদ, গুপ্তহত্যা, জঙ্গিদের অপতৎপরতা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বেই রয়েছে। বিশ্ব একটা অস্থির সময় পার করছে। জঙ্গিরা সারা দুনিয়ায়ই সক্রিয়। অস্থিরতা সৃষ্টিতে ব্যস্ত। আমেরিকার কথা ধরুন, সবাইকে তারা জ্ঞান দেয়, পরামর্শ দেয় জঙ্গি দমনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার। অথচ ওদের ওখানেই জঙ্গি হামলায় সম্প্রতি ৫০ জন মানুষ খুন হয়েছে। এখন কী বলবেন, আমেরিকার চেয়েও বাংলাদেশ খারাপ অবস্থায় আছে? নেই কিন্তু।
তিনি আরও বলেন, এটা শুধু আমার বক্তব্যই নয়, বাস্তবতাই তাই। বরং জঙ্গি দমনে বাংলাদেশকে প্রশংসা দেয় সবাই। না দেওয়ারও কোনো কারণ নেই। সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গি উত্থান, প্রতিরোধে বাংলাদেশ এখন মডেল। সেই মডেল একদিন সমগ্র পৃথিবী ব্যবহার করবে। সাবেক এই চাকসু ভিপি বলেন, হত্যাকা-গুলোর মধ্যে কমন কিছু ইন্টারেস্ট রয়েছে। জামায়াতের কাছে গুরুত্বপূর্ণÑ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা। এখন তাদের হাতে আইনসিদ্ধ কোনো পথ আর নেই। একমাত্র পথ, সরকারকে বিপদে ফেলা, ক্ষমতাচ্যুত করা। সরকারকে সরাতে জামায়াত যে কারও সঙ্গে ষড়যন্ত্রে হাত মিলাতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ৯ বছরেরও বেশি ক্ষমতার বাইরে, তারাও চায় সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি। সরকার পড়ে গেলে তারা ক্ষমতা নিবে। তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব এজেন্ডা রয়েছে। বিএনপির একধরনের এজেন্ডা, জামায়াতের এজেন্ডা ভিন্ন। তারা তাদের এজেন্ডা নিয়ে এগোচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে, যে যেমন এজেন্ডাই নিক না কেন, আওয়ামী লীগও বসে নেই। আমরাও ষড়যন্ত্রকারীদের সকল ষড়যন্ত্র, অপতৎপরতা বন্ধে তৎপর। ষড়যন্ত্রকারীরা কোনোভাবেই সফল হবে না।
বিএনপি নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারেক রহমান দুর্নীতিবাজ একজন মানুষ। তিনি ষড়যন্ত্রের ভিতর দিয়েই রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার সেই অপপ্রয়াস সফল হয়নি। অনিয়ম-দুর্নীতি, ষড়যন্ত্র অসৎ কোনো উপায়েই তিনি তার প্রচেষ্টা সফল হননি। অতীতে তার এই অপতৎপতার সফলতা লাভ করেনি, আগামী তিনি সফল হবেন না। নব্বই পরবর্তী অপরাজনীতির অন্যতম প্লেয়ার তিনি। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
সাম্প্রতিক জঙ্গি অপতৎপরতায় সরকার কী উদ্বিগ্ন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার কোনোভাবেই উদ্বিগ্ন নয়। বরং আরও বেশি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। কেননা, জনগণের কল্যাণে নিবেদিত এই সরকার ঠুনকো, অপতৎপরতায় লিপ্ত কিছু মানুষের কারণে উদ্বিগ্ন হতে পারে না। আমরা উদ্বিগ্নও নই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানো গোষ্ঠীর বিষদাত ভেঙে দিব। জনগণই জয়ী হবে। বাংলাদেশ বিজয়ী হবেই বলেও মনে করেন এই রাজনীতিক।
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন