ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের সমালোচনায় জাপার সংসদ সদস্য
মাহমুদুল আলম : জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে আর্থিক খাতের অনিয়ম তুলে ধরেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলন। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যায়, বিচার হয় না। উল্টো অর্থের যোগান দেওয়ার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় বাজেটে। বিষয়টি এমন দাঁড়ায় যেন ‘যত পারো লুটপাট করে খাও, টাকা লাগলে দেবে গৌরি সাহেব’। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
আর্থিক খাতে অনিয়ম তুলে ধরে নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৭১.৩৭ শতাংশ অর্থ আসবে সাধারণ জনগণ থেকে পরোক্ষ করের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণের উপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে। এটা সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার কোনো লক্ষণ নয়। সংসদ সদস্য বলেন, ব্যাংকগুলোতে কোনো অডিট আছে বলে মনে হয় না। তাদের দক্ষতার বালাই নেই। আর যারা নজরদারি করবে অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ইতোমধ্যে ৮০০ কোটি টাকা লুট হয়েছে। ঋণ গ্রহণ করে পরিশোধ করতে হয় না। লুটপাট করলে বিচার হয় না, এটাই হলো ব্যাংকিং বিভাগ। তিনি প্রস্তাবিত বাজেট থেকে ব্যাংকিং বিভাগের জন্য বরাদ্দ প্রত্যাহারের দাবি করেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর বিরাট জনবল বাড়ানোর পরও ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা থেকে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা স্থির করতে হয়েছে। আগামী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বেশি। এটি এনবিআর’র পক্ষে সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, শিক্ষাখাতে বরাদ্দকে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিক্ষানীতি অনুসারে, ২০১৮ সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্ঠম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার কথা। যে গতিতে কার্যক্রম চলছে তাতে মনে হয় না লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। এ পর্যন্ত ৭৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার বৃদ্ধি স্কুলে ধরে রাখার লক্ষ্যে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালুর প্রস্তাব করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত আড়াই বছর ধরে এমপিওভুক্তি বন্ধ রয়েছে। একটি দেশে দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকলে সে দেশের শিক্ষার সম্প্রসারণ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। এটা শিক্ষানীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমপিওভুক্তি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সন্দেহ থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, শতকরা ৩০ ভাগ প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী নেই, অথচ বেতন নেওয়া হয়। তার এ সন্দেহের আলোকে এমপিওভুক্তি বাতিল করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।