জাকাত না দেওয়ার পরিণতি
া রোকন রাইয়ান
খেলাফতের প্রথম যুগ। রাজ্য শাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে আবু বকর রা.। নবীজির কাছের ও প্রাণপ্রিয় সাহাবি। সবাই মুগ্ধ তার আচরণে। কিন্তু গোমরাহির যেহেতু সময় বলে কথা নেই, একদল শুরু করল অবাধ্যতা। তারা সম্পদের জাকাত দিবে না। এমন অদ্ভুত সমস্যা যখন ছড়িয়ে পড়ল, কঠোর হলেন খলিফা। দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করলেন তাদের বিরুদ্ধে। ভাবলেন এখনই জাকাত অস্বীকারীদের দমন করতে হবে। তিনি শপথ নিলেন, ‘ধর্মের ক্ষতি হবে অথচ আমি জীবিত! আল্লাহর শপথ! আমি তাদের সঙ্গে লড়ব, যারা নামাজ ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করে।’ তিনি আরও বললেন, ‘যদি তারা একটি উটের রশি পরিমাণ বস্তুর জাকাত দানেও অস্বীকৃতি জানায়, তবু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ আবু দাউদ, মেশকাত
ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর রা. এর কঠোর অবস্থানে মদিনায় ফিরে এলো শান্তি। সবাই আবারও তাদের সম্পদের জাকাত দিতে শুরু করল। দরিদ্ররাও পেল তাদের প্রাপ্য। আর আমরা পেলাম কঠোর শিক্ষাÑ জাকাত অবশ্যই পালন করতে হবে। আর জাকাত অস্বীকারকারীদের পক্ষাবলম্বন করা যাবে না। যারা জাকাত দেবে না তারা ধর্মের শত্রু। রাষ্ট্র তাদের ব্যাপারে কঠোর হতে পারে। পরকালে তো তাদের জন্য শাস্তি রয়েছেই।
জাকাত অস্বীকারকারী বা অনাদায়কারীর শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, যারা সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদের যন্ত্রণাময় শাস্তির সংবাদ দাও। যেদিন ধন-সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দ্বারা তাদের কপাল, তাদের পাজর ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। বলা হবে, এই হচ্ছে সেই সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্চীভূত করতে, সুতরাং তোমরা যে সম্পদ পুঞ্জীভূত করতে তার মজা ভোগ কর। সুরা তাওবা : ৩৪,৩৫
যারা জাকাত আদায় করবে না, বঞ্চিত করবে গরিব এতিমদেও, গ্রাস করবে অবৈধ সম্পদ তাদের সম্পদ আল্লাহ ছিনিয়ে নেবেন। কীভাবে? হতে পারে আপনি বহু সম্পদের অধিকারী। বাড়ি গাড়ি সবই আছে। সুখ শান্তিতেই দিনাতিপাত করছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই বিপদ এলো। আপনি পড়লেন কঠিন গ্যারাকলে। যেখান থেকে উঠার কোনো পথ নেই। কিংবা কোনো মামলায় পড়লেন বা প্রতারণায়, আপনার সম্পদ, সারা জীবনের উপার্জন উধাও। বিষয়টির ইঙ্গিত হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ এভাবে দিয়েছেন, ‘যে ব্যক্তি মালের জাকাত আদায় করবে, সে অবশ্যই প্রতিদান পাবে। যে ব্যক্তি আদায় করবে না, আমি তার অংশ থেকে (অন্য কোনো উপায়ে) অবশ্যই তা আদায় করে নেব।’ আবু দাউদ, নাসাঈ
একবার হাদিসের দিকে খেয়াল করেই দেখুন! সমাজে এমন ঘটনা ঘটছে কিনা। সুতরাং অনিষ্টের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে সম্পদের জাকাত দিন। আপনার অর্থ হালাল করুন। আর আখেরাতে শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকুন।