া মিযানুর রহমান জামীল
মানবতার কল্যাণে রমজানের শুভাগমন। এই মাসকে উপলক্ষ করে মানুষ ও সমগ্র সৃষ্টিতে লাগে সভ্যতা সৌন্দর্যের নির্মল ছোঁয়া। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের বেশি বেশি নেক আমল, গুনাহ মাফ আর তাকওয়া অর্জনের সুযোগ করে দেন এ মাসে। তাই তিনি তাঁর ভয় অন্তরে প্রতিস্থাপনের মোক্ষম সুযোগ হিসেবে দান করেছেন এই মূল্যবান মাসটি।এ সম্পর্কে সুরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো।’
আর কেয়ামতের দিন এই রোজাদারদের সম্মানার্থে আরশের নিচে বিছিয়ে দেয়া হবে সুকমল দস্তরখান। আর তাই রোজাদার এবং রোজাহীন উভয়ের মধ্যে কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সময়ক্ষেপণের মতো বিভাজনের একটি বিশেষ পর্দা টানিয়ে দেবেন। এ প্রেক্ষিতে বুখারি শরিফের : ২/২৭ নং হাদিসে এসেছে, ‘রোজাদারদের জন্য কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নিচে দস্তরখান বিছানো হবে। রোযাদাররা দস্তরখানের সামনে বসে খাবার খেতে থাকবেন। সবাই তখন নিজের আমলনামার হিসেব দেওয়ার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণে দাঁড়িয়ে থাকবে এবং দেখবে, কতিপয় লোক খাবার খাচ্ছে আর আমরা এখনও হিসেব দেয়ার জন্য অপেক্ষার কঠিন প্রহর গুনছি। প্রশ্নমাখা বিষ্ময়ের উত্তরে অপেক্ষমান সবাইকে বলা হবে, ‘পৃথিবীতে তারা রোজা রাখতো আর তোমরা রোজা রাখতে না।’
এরপর আল্লাহর সন্তুটির জন্য রোজা পালনকারীদের জান্নাতে প্রবেশের জন্য থাকবে রাইয়ান নামক আলাদা দরজা। কেয়ামতের দিন উচ্চ আওয়াজে আহ্বানের পর যে দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররাই প্রবেশ করতে পারবে। বুখারি শরিফের ১/২৫৪ নং হাদিসে এর বাস্তবতা বিদ্যমান, হজরত সাহল বিন সা’দ রা. বলেন, হুজুর সা. বলেছেন, মনোরম জান্নাতের দরজাসমূহের মধ্যে একটি দরজার নাম ‘রাইয়ান’। কেয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে কেবল রোজাদাররাই প্রবেশ করবে অন্য কেউ নয়।
হাদিস শরিফে নিষ্ঠার সাথে রমজান পালনের দ্বারা অতীতের গুনাহ ক্ষমা করার সুসংবাদও এসেছে। এ সম্পর্কে রাসূল সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ ইমান ও নিষ্ঠার সাথে সিয়াম-সাধনা করে, তার অতীত জীবনের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ রোজাদারের এই অসীম ফজিলত ইহধামের সামান্য আমলের মাধ্যমে পাওয়া যায়। মানুষ তারপরও রোজার বাস্তবতা থেকে গাফেল থেকে যায়। সমাজের প্রতিটি মানুষের উপর যদি একক মেহনত আর চেষ্টা চালানো যায় তবে আশা করা যায় মাহে রমজান তাদের কাছেও হয়ে ওঠবে মুক্তি ও কল্যাণের মাধ্যম হিসেবে। আল্লাহ সকলের সহায় হোন। আমিন।
সহকারী সম্পাদক, মাসিক আর-রাশাদ