ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে হিন্দুদের ওপর হামলা ও হুমকির খবর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিয়মিতই হামলা হচ্ছে বাংলাদেশে। মাদারীপুরের কলেজ শিক্ষকের ওপর হামলা ও ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের সবাইকে হত্যার হুমকি দেয়ার পর তাই আবার সামনে এসেছে একটি প্রশ্ন বাংলাদেশ কি জঙ্গিবাদের ঘাঁটি হতে চলেছে? টাইম ডটকমের এক প্রতিবেদন এমনটিই বলছে। সেখানে বিশেষ্জ্ঞদের অভিমত হিসেবে জানানো হয়েছে, ‘আইএস আর আল-কায়েদার নতুন ঘাঁটি হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। অনেক বছর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ কয়েকটি দেশে জঙ্গি হামলার খবর প্রকাশিত হতো। এখন পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে প্রায় নিয়মিতই আসছে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার খবর। বুধবার মাদারীপুরের নাজিমুদ্দীন কলেজের গণিতের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে কুপিয়ে আহত করে তিন সন্ত্রাসী। হামলাকারীদের একজনকে জনতা ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় এসেছে এ খবর। ডন লিখেছে, গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান, সুফি মুসলমান, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি এবং বিদেশিরা ব্যাপক হামলার শিকার হচ্ছে এবং হামলায় এ পর্যন্ত ৫০ জনের মতো নিহত হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সও প্রকাশ করেছে নিজের ভাড়া বাসায় এক হিন্দু কলেজ শিক্ষকের নির্মম হামলার শিকার হওয়ার খবর।
এদিকে বিবিসি-র প্রতিবেদনে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বলেছেন, জঙ্গি হামলার সঙ্গে কারা জড়িত এ বিষয়ে তার কাছে তথ্য আছে সেকথাও উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে চলমান জঙ্গি বিরোধী অভিযানে অনেক মানুষ গ্রেপ্তার হলেও পুলিশ যে খুব বেশি জঙ্গি ধরতে পারেনি সে বিষয়টিও পাঠকদের জানিয়েছে তারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও ৫০ বছর বয়সি শিক্ষক রিপন চক্রবর্ত্তীর ওপর হামলার খবরটি গুরুত্ব পেয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্স্রপেস, এবিপি নিউজ, হিন্দুস্থান টাইমসসহ প্রায় সব ভারতীয় সংবাদপত্রই প্রচার করেছে এ খবার।
মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষকের ওপর হামলার পরই ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের পুরোহিতসহ সবাইকে চিঠি পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিঠির ওপরের অংশে প্রেরক হিসেবে কোনো এক এ বি সিদ্দিক ও ‘ইসলামিক স্টেট অফ বাংলাদেশ’-এর নাম উল্লেখ করা হয়। ইসলামিক স্টেট অফ বাংলাদেশের কার্যালয়ের ঠিকানা হিসেবে লেখা হয়, ‘চান্দনা চৌরাস্তা ঈদগাঁও মার্কেট, গাজীপুর মহানগর’। চিঠিতে বলা হয়, ‘‘তোমরা হিন্দু। বাংলাদেশ একটি ইসলামি রাষ্ট্র, এ দেশে ধর্ম প্রচার করতে পারবে না। তোমরা ভারতে যাও। না হলে তোমাদের কুপিয়ে হত্যা করা হবে। ‘’ এই খবরটিও এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
আতঙ্কজনক এ সব খবরের পাশাপাশি একটি স্বস্তির খবরও অবশ্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তথাকথিত জঙ্গি হামলার অনেক খবর প্রকাশিত হলেও হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের খবর খুব কমই পাওয়া যায়। তবে বুধবার পুলিশ জানায়, প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল হত্যা প্রচেষ্টায় জড়িত এক জঙ্গিকে তারা গ্রেপ্তার করেছে।