তেরখাদা (খুলনা) প্রতিনিধি : সরকারি পৃষ্ঠপোকতার অভাবে তেরখাদা উপজেলায় আখ চাষ বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে। এক সময়ে উপজেলার সর্বত্রই মাঠের পর মাঠ আখ চাষ হত। আখ বাংলাদেশের অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম। কৃষকের অতীত ঐতিহ্যের ধারক বাহক হিসেবে এলাকার চাষিরা আখ চাষে বেশি সফলতা অর্জন করত। কৃষকের ন্যায্য দাম আর অনুকূল পরিবেশ না থাকার কারণে তেরখাদায় আখ চাষ বিলুপ্তি প্রায়।
বেশ কয়েক বছর আগেও আখ চাষ কৃষকের নিকট গুরুত্ববহ ছিল। শীতের মৌসুমের শুরুতেই আখ মাড়াই শুরু হয়ে যেত। চাষিরা আখ মাড়াই করে রস জ্বালিয়ে গুড়, পাটারি তৈরি করত। এ সময়ে সনাতন পদ্ধতিতে গরু দিয়ে আখ মাড়াই করা হত। মাঝ রাত হতেই শুরু হয়ে যেত দু’একটি বাড়ি ছাড়া গ্রামাঞ্চলের সকল বাড়িতে শীত মৌসুমে ব্যস্ততার সাথে আখ মাড়াইয়ের সময় অতিবাহিত করত।
উপজেলার জয়সেনা গ্রামের নিজাম খাঁ জানান, আখ চাষ করে আমরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক সফলতা অর্জন করেছিলাম। পানতিতা এলাকার রুবেল মোল্যা জানান, আখের কান্ড পঁচা ও মাজরা রোগের কারণে কৃষকরা এখন আর আখ চাষ করতে চায় না। সরকারিভাবে যদি কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করানো হয় তাহলে আবারো কৃষকরা আখ চাষে ফিরে আসতো বলে মনে করে অনেকে।
আখ চাষে একদিকে পরিবারের সারা বছরের জ্বালানী ও মিষ্টির চাহিদা মেটাত।
পানতিতা শেখপাড়া এলাকার চাষী শেখ আসাদুজ্জামান জানান, আখ চাষে অধিক পোকার আক্রমণ ও বছরে এক ফসলী। মাড়াই কলের অভাব ও অন্য ফসলের চাইতে অলাভজনক হওয়ায় তেরখাদার কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।
এদিকে তেরখাদা উপজেলার আড়ফাঙ্গাশিয়া এলাকার কৃষক ইসলাম শেখ জানান, তার এক বিঘা জমিতে আখ চাষ করে তিনি প্রায় ১ লক্ষ টাকার কাঁচা আখ বিক্রি করেছেন। এ ব্যাপারে তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, আখ চাষ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে একেবারেই নেই বললেই চলে। কারন হিসেবে রোগ বালাই সারা বছর একটানা ফসল ও জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা আখ চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে।