চক্রের ২১ সদস্য গ্রেফতার ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় অজ্ঞানপার্টি
সুজন কৈরী : বরাবরের মতো এবারও ঈদকে সামনে রেখে রমজান মাসজুড়ে তৎপর হয়ে উঠেছে মৌসুমি অপরাধীরা। বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনাও। এছাড়া পকেটমার, মলমপার্টি, টানাপার্টি, অজ্ঞানপার্টি চক্রের সদস্যরাও বসে নেই। তাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নাগরিক জীবন। মাঝে-মধ্যে পুলিশের হাতে চক্রের কিছু সদস্য ধরা পড়লেও অধিকাংশই থাকে অধরা। যাদের আটক করা হয়, তারা আইনের ফাঁক গলিয়ে বাইরে এসে আবারও একই কাজ করে থাকে।
জানা গেছে, রাজধানীর বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশনসহ অর্ধশত স্পটে ছদ্মবেশে এসব চক্রের সদস্যরা সক্রিয়। প্রায় প্রতিদিনই তাদের কবলে পড়ে টাকা-পয়সা, মোবাইল, মানিব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র খুঁইয়ে ও মুমূর্ষু হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন অনেকেই।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অজ্ঞানপার্টি চক্রের ২১ সদস্যকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আবুল হোসেন, মনসুর আলী, শহীদ, শাহজাহান, আবুল হোসেন-২, মনিরুল ইসলাম, মো. রাজু, আবু সাঈদ, নুরুজ্জামান, জাকির হোসেন, আব্দুর রহমান, নূর ইসলাম, সন্তোষ কুমার দে, জুয়েল, আল মামুন, হোসাইন মো. সুমন ও জুম্মন। এছাড়া গতকাল বিকেলে মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে আবুল বাশার ও স্বপন মিয়া নামে চক্রের অপর দুই সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, গত বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে একাধিক অভিযান চালিয়ে অজ্ঞানপার্টির ২১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে ২৮ পুরিয়া হালুয়া, হলুদ রঙের বাক্সে জিরো ক্যালরি লেখা টেবলেট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মতিঝিল থেকেও চক্রের অপর দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, রাজধানীতে গত বছর ও তার আগের বছর অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য বেশি ছিল। এবারও তারা চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, এবার আমরা ঈদের আগেই অভিযান শুরু করেছি। ইতিমধ্যে অজ্ঞানপার্টির বেশকিছু সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মনিরুল আরও বলেন, বাসের যাত্রী সেজে অথবা বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে আকৃষ্ট করে অজ্ঞান করার ওষুধ মিশ্রিত খাবার খাওয়ান অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। একইভাবে রাস্তায় খাবারের পসরা বসিয়ে (আখের রস, ডাব ও হালুয়া, ইসুপগুল) এবং সিএনজিতে যাত্রীবেসে অন্য যাত্রীকে উঠানো কিংবা পান ও জুস খাইয়ে অজ্ঞান করেন চক্রের সদস্যরা। তিনি বলেন, চলতি রমজান ও এবারের ঈদে অজ্ঞানপার্টি যাতে দৌরাত্ম্য দেখাতে না পারে সেজন্য সক্রিয় নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিশেষ অভিযানও চলছে। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি