লেকের সৌন্দর্য অবলোকন সার্বজনীন নয় কেন?
ইকতেদার আহমেদ
হাতিরঝিল নামক লেকটির চতুর্পাশে গাড়ি চলাচলের জন্য প্রশস্ত সড়কের ব্যবস্থা থাকায় এ এলাকায় যানজট হওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। তাছাড়া সুপ্রশস্ত সড়ক ব্যবস্থার কারণে এটি শহরের অসহনীয় যানজট সমস্যা লাঘবে কার্যকর অবদান রাখছে। ধানমন্ডি ও গুলশান আবাসিক এলাকা প্রতিষ্ঠার পর প্লট বরাদ্দ সমাপ্ত হওয়ার দু’থেকে তিনযুগ পর দেখা গেছে আবাসিক এলাকা ও লেকের মূল পরিকল্পনা হতে বিচ্যুত হয়ে লেকের মধ্যে মাটি ভরাট করে সময়ের বিবেচনায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে দেখা যায়, লেকের পানি স্বচ্ছ ও নির্মল থাকে এবং সেখানে মাছ চাষ করে শহরবাসীর জন্য মাছের বাড়তি যোগানের ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের সদ্য প্রস্তুতকৃত হাতিরঝিলসহ ধানমন্ডি ও গুলশান লেকের পানি সেভাবে স্বচ্ছ ও নির্মল নয়। লেক দুটিতে যদিও বিচ্ছিন্ন ও অপরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ করা হয় কিন্তু মাছের যোগান সম্ভাবনার তুলনায় কিঞ্চিৎ। আর হাতিরঝিলের পানি দূষণমুক্ত রাখার ব্যর্থতা না ঢাকতে পারার কারণে এটিকে এখনও মাছ চাষের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে একটি নগরের আবাসিক এলাকায় লেকের ব্যবস্থা করা হয় আমাদের ধানমন্ডি ও গুলশান লেক সে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হতে অনেক দূরে। জনস্বার্থকে মুখ্য ভেবে সরকার চাইলে এ দুটি লেকের চতুর্পাশে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ ও হাতিরঝিলের মতো পায়ে হাঁটার পথ ও গাড়ি চলার পথ এবং বিশ্রাম ও বিনোদনের নিমিত্ত ফুলগাছের সমারোহ ঘটিয়ে লেক প্রতিষ্ঠার যথার্থতাকে বাস্তব রূপ দিতে পারে। আর এটি করা হলে তা শহরটির যানজট সমস্যা উপশমে বহুলাংশে অবদান রাখবে। সরকার শত বাঁধা অতিক্রম করে হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়ন ও প্রকল্পস্থিত বিজিএমইএ ভবন অপসারণে সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়ায় ধানমন্ডি ও গুলশান লেকের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হলে যে সফলতা পাবে তা নগরবাসী অনুধাবন করতে সক্ষম।
লেখক : সাবেক জজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন