গোড়াতে যেতে হবে
ড. বদরুল হাসান কচি
সাম্প্রতিক হত্যাকা-গুলোর ধরন বলছে এগুলো পরিকল্পিত হচ্ছে; সেটি রাজনৈতিক কিংবা জঙ্গি যে অবস্থান থেকেই হোক না কেন। মাদারীপুরে হিন্দু শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করতে গিয়ে কয়েকজনের মধ্যে যে ব্যক্তি জনগণের হাতে ধরা পড়েছে, তাকে ভালো করে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার ইন্ধনদাতা কে, পেছনে কোন শক্তি জড়িত এবং কোন প্রেরণা বলে সে এমন একটি কাজ করেছে, সে কারণটি বের করা হোক। তাতে নিশ্চয়ই বড় কোনো সূত্র পাওয়া সম্ভব; কেননা ধারণা করা যায়, সব হত্যাকা-ের পেছনে কোনো মহাপরিকল্পক রয়েছে, সে মাথাটি ধরতে পারলে হয়তো এখনকার মতো গণগ্রেফতার মিশনটি পুনরায় প্রয়োজন হবে না।
বছর খানেক আগে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে যখন একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যাচ্ছিলো, তখন কিছু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ দৌড়ে হত্যাকারী দুজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছিল। ওই দেওয়া পর্যন্তই শেষ। যদি এই সূত্র ধরে পুলিশ ঘটনার পেছনে যেতে পারত, তাহলে হয়তো ওই ঘটনার পর দেশে ঘটে যাওয়া আরও কিছু প্রাণ বেঁচে যেত। কারণ ঘটনার কাহিনী বর্ণনায় বোঝা যায়, এই হত্যাকা- কেন্দ্রীয় কোনো পরিকল্পনাকারীর ছক মতোই ঘটছে। সেই জায়গায় যতক্ষণ না আঘাত করা যাবে, ততক্ষণ আদতে কোনো ফল আসবে বলে মনে হচ্ছে না। সেটা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে, যারা অপরাধী তারা আমাদের প্রতিরোধ বাহিনীর চেয়ে বেশি চৌকস। সেই চালাকিতে পেরে উঠছেন না বলেই, অপরাধী ধরতে এতো মরিয়া; তাতেও তেমন কোনো ফল নেই। তাই বলছিলাম, পরিকল্পনাকারী ধরুন; আর সেজন্যে দরকার সঠিক পরিকল্পনামাফিক পদক্ষেপ। যেকোনো একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে একটা কিছু করে ফেলব এমন মনোভাব হেঁয়ালি ছাড়া আর কিছু নয়। বড় ব্যথা সারতে মলম কখনই সঠিক প্রতিষেধকের ভূমিকা নিতে পারে না; তার জন্য প্রয়োজন সঠিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ। তবেই একটি কার্যকরী ফলাফল আসবে; নতুবা মলমের মতো সাময়িক ব্যথাই দূর হবে।
লেখক : আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন