ইইউর অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে অনুদান প্রত্যাখ্যান এমএসএফের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে সংস্থাটি থেকে আর অনুদান বা তহবিল নেবে না প্রখ্যাত দাতব্য সংস্থা ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার (এমএসএফ)। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়েছে, অভিবাসন স্রোত ঠেকাতে মার্চে তুরস্কের সঙ্গে করা ইইউ’র চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এমএসএফ। সংস্থাটি জানিয়েছে, এ চুক্তি শরণার্থী ধারণাকেই বিপন্ন করে তুলেছে। চুক্তি মোতাবেক সব অভিবাসীকে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে তুরস্ক। প্রসঙ্গত, ইইউ ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে গত বছর প্রায় ৬ কোটি ৩০ লাখ ইউরো পেয়েছিল স্বাস্থ্য-দাতব্য সংস্থাটি। সাধারণত, অনুদান ও তহবিলের ওপরই এর ব্যায়নির্বাহ নির্ভরশীল। আর ইইউ হলো এমএসএফ’র অন্যতম বৃহৎ দাতা।
ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান সহ বিশ্বের যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাসমূহ এবং আফ্রিকা সহ দারিদ্র্য ও বিদ্রোহ উপদ্রুত এলাকায় লোকজনকে স্বাস্থ্যসেবা দেয় এমএসএফ। এমন অনেক অঞ্চলে সংস্থাটির হাসপাতালও রয়েছে। আফগানিস্তানে এমএসএফ’র সর্ববৃহৎ হাসপাতালটি কয়েক মাস আগে মার্কিন বিমান হামলার শিকার হয়। এ হামলার বিপরীতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় সংস্থাটি। একে ইচ্ছাকৃত এবং বেসামরিক জনগণ ও হাসপাতালের রোগীদের জীবনের তোয়াক্কা না করার সামিল বলে দাবি করে এমএসএফ। এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তেরও দাবি জানানো হয়। এছাড়া ইরাক ও সিরিয়া থেকে ইউরোপগামী শরণার্থীদের পাশেও অবস্থান নিয়েছে এমএসএফ।
ইইউ’র বিপুল অঙ্কের তহবিল প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়ে টুইটারে এমএসএফ লিখেছে, ইইউ ও তুরস্ক চুক্তিকে মানবিক হিসবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের দুর্দশা গোপন করার মধ্যে কোন মানবিকতা নেই। আরেক টুইটে বলা হয়, ‘সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য মানবিক ত্রাণ আমরা প্রত্যাখ্যান করি। যেসব সরকার ত্রাণের অপব্যবহার করে, তাদের কাছ থেকে আমরা অর্থ নিতে পারি না।’ পরের টুইট বার্তায় বলা হয়, ‘আমরা ইইউ ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে আমরা অর্থ নেব আবার একই সঙ্গে তাদের নীতির কারণে ভুক্তভোগী মানুষজনকে চিকিৎসা সেবা দেব তা হবে না।’ এমএসএফ বলেছে, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষকে গ্রহণ ও ব্যাক্তিবিশেষের প্রয়োজন কেন্দ্রিক কোন নীতিমালা প্রণীত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ইইউ বা এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে অর্থ চাইবো না। তবে এ সিদ্ধান্তের ফলে বিদ্যামান রোগীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না বলেই জানানো হয়েছে।
বর্তমানে নিজেদের জরুরী তহবিল ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্প অব্যাহত রাখা হবে। সংস্থাটির মত, মানুষকে ফেরত পাঠানোর নীতির বদলে তাদেরকে সুরক্ষা ও সহযোগিতা করার নীতি গ্রহণ করতে হবে ইউরোপকে।