কয়েক হাজার হিজবুত সদস্য ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা
আজাদ হোসেন সুমন ও ইসমাঈল হুসাইন ইমু : সরকারকে বেকায়দায় ফেলা ও খিলাফত রাষ্ট্র কায়েমের নামে আবারও সক্রিয় হচ্ছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর। ইতোমধ্যে তারা দেশের বিভিন্নস্থান থেকে এসে ঢাকায় জড়ো হচ্ছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এদের সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করছে। জামায়াত-শিবিরের সহযোগিতায় রাজধানীতে জড়ো হওয়া হিজবুত সদস্যরা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
গত এক সপ্তাহের জঙ্গি দমন অভিযানে ২১ হিজবুত তাহরীর সদস্য ধরা পড়েছে। এরা অন্য জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে মিলে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার সমাবেশ ডেকেছিল দলটি। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে মাঠে নামতে পারেনি জঙ্গিরা। এই সমাবেশ উপলক্ষে কয়েক হাজার হিজবুত সদস্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকায় জড়ো করা হয়েছে। আর তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে শিবিরের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, গত বছর রমজান মাসে পোষ্টার ছাপিয়ে সমাবেশের ঘোষণা দেয় দলটি। পরে নির্দিষ্ট দিনে ইফতার শেষ হতে না হতেই পল্টনে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এবার তারা আরও ভয়ঙ্কর কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সময় র্যাব-পুলিশের হাতে ধরা পড়া হিজবুত সদস্যরা দেশে নতুন করে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার কথা স্বীকার করেছেন।
তারা জানিয়েছে, তাদের অর্থের উৎস বিদেশি এক গোয়েন্দা সংস্থা। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক আছে হিযবুত তাহরীর। তাদের যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে মওদুদীবাদী জামায়াত। হিযবুত তাহরীর সংগঠকরা ইসলামের দোহাই দিয়ে মগজ ধোলাই করে কর্মী সংগ্রহের দুর্গ হিসেবে বেছে নিয়েছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রদের।
এছাড়া গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে দলে ভেড়ানোর কাজ চালিয়ে আসছে তারা। ওইসব শিক্ষার্থীর মগজ ধোলাইয়েল মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে নেতৃত্বে নেয়া হয়। শুধু তাই নয়, মাঠপর্যায়ে হামলা চালানোসহ জঙ্গি প্রশিক্ষণও দেয়া হয় নতুনদের। সূত্রমতে, সচিবালয়, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন, এয়ারপোর্ট, রেল ও বাস টার্মিনালসহ দেশের স্পর্শকাতর স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে এরা সংগঠিত হচ্ছিল। কিন্তু এ সংবাদ আগেই পেয়ে নড়ে চড়ে বসে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় ইতোমধ্যে ভেস্তে গেছে হিজবুত তাহরীর প্রাথমিক মিশন।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পুলিশের বিশেষ অভিযানে হিজবুত তাহরীর ২১ সদস্য ধরা পড়েছে। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে সতর্ক হয়ে গেছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। অন্যদর গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, আগের দিন নেই। এখন র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সংখ্যায় অনেক বেশি এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর। ফলে জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা নাশকতার পরিকল্পনা করার পর সেটা বাস্তবায়নের আগেই ধরা পড়ে যায়। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি