সোলায়মান ডালিম
দেশে কী হচ্ছে? সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি দেশকে যেন ক্রমেই পেছনে টানছে। দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ও সাধারণ মানুষকে গুপ্তহত্যা বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করছে । সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতি সকল প্রচেষ্টা ও সম্ভাবনার পথ রোধ করে দাঁড়াতে চাইছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে, সন্ত্রাস করছে, তাদের খুঁজে বের করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে হবে। জনগণেরও একই কথা। সন্ত্রাসী পাকড়াও করো এবং সমাজ থেকে সমূলে সন্ত্রাস উৎপাটন করো। সন্ত্রাসী সে যত ক্ষুদ্রই হোক, তাকে ধরতে হবে। ঠিক আছে। কিন্তু সমাজ থেকে সন্ত্রাস সমূলে উৎপাটন করতে হলে এসবের পেছনে যারা আছে তাদেরও সঠিকভাবে সনাক্ত করা একান্ত প্রয়োজন। তাদেরও আইনের আওতায় আনা বাঞ্ছনীয়। যাদের চিন্তা ও মতাদর্শ থেকে এই সন্ত্রাসের জন্ম, যারা সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে, তাদেরও চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
সততার পরিচয় দিতে হবে প্রশাসনকেও। মানতে হবে, এই সন্ত্রাসীদের জন্মদাতারা এই সমাজের মধ্যেই আছে। এই সমাজেই তাদের বিচরণ, স্বীকার করতেই হবে, ক্যাডার নির্ভর একশ্রেণির রাজনীতিক, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক সন্ত্রাসী লালনপালন করে থাকে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি তো আছেই। স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের অসাধু উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যে নতুন নতুন সন্ত্রাসী তৈরি করে এবং লালনপালন করে। ক্যাডার নির্ভর এই শ্রেণির রাজনীতিকের সঙ্গে জনগণের কোনো যোগাযোগ বা সমপৃক্ততা নেই, থাকতে পারে না।
অবৈধভাবে অর্থ, পদ, পদবি, ক্ষমতার লোভে এই নষ্ট সংস্কৃতিকে জিইয়ে রেখেছে তথাকথিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত একটি শ্রেণি। ন্যায়বোধ, সততা, মর্যাদাবোধ জলাঞ্জলি দিয়ে একশ্রেণির পেশাজীবী, সুশীল-শিক্ষিত মানুষ বিবেককে এড়িয়ে চলছেন। ফলে অপরাধীরা, জঙ্গিরা, মৌলবাদীরা টিকে আছে সমাজে।
এ বাস্তবতায় রাজনীতিবিদদের কাছে অনুরোধÑ চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনুন। দেশে ত্রাস সৃষ্টি করা সম্ভব হলেও উন্নয়ন ও শান্তি থাকবে সুদূরপরাহত হয়ে। অথচ দেশের মানুষ শান্তি চায়, চায় নির্ভয় নিরাপদ জীবন।
লেখক : গণমাধ্যম কর্মী / সম্পাদনা : জব্বার হোসেন