অসুস্থ তালেহউদ্দীন খানও। আমাদের মধ্যে বই কেনা ও পড়ায় তালেহউদ্দীনই ছিল সেরা। তার বিশেষ উজ্জ্বলতা ছিল বাগবৈদগদ্ধে, একবার কে একজন তাকে ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেছিল, আক্কেলমন্দকে লিয়ে ইশারাই কাফি হ্যায়, সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের মতো তালেহউদ্দীনের প্রত্যুত্তর ঝলসে উঠেছিল, ‘কভি কভি বেআক্কেল ভি ইশারা করতে হ্যায়’। শুনে আক্কেলের দাবিদারের পক্ষে চুপসে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকেনি। ওই রকমের উক্তি তালেহউদ্দীন অনায়াসে করত। তালেহউদ্দীন শিক্ষকতা দিয়েই কর্মযাত্রা শুরু করেছিল, পরে ভয়ঙ্কর এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওই কাজে ক্ষান্ত দিয়ে ইংরেজি সাংবাদিকতায় যোগ দেয়। চমৎকার লিখতো, কিন্তু সেই দুর্ঘটনাজনিত শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাজটা অব্যাহত রাখতে পারেনি।
এই যে আমার সহপাঠীদের বিবরণটা দিলাম স্মৃতিচারণের বাইরে তার আর একটা উদ্দেশ্য আছে। সেটা হলো আমাদের কালে শিক্ষার মধ্য দিয়ে মধ্যবিত্ত কিভাবে গড়ে উঠছিল তার একটি ছবি তুলে ধরা। সকলে সমান তালে এগোতে পারেনি। দু’একজন পিছিয়ে গেছে। কিন্তু কারও জন্যই জীবিকার অšে¦ষণ ভয়ঙ্কর অনিশ্চিত একটা ব্যাপার ছিল না, পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের জন্য যেমনটা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় তখন আয়তনে এত বড় প্রতিষ্ঠানও নয়; ছাত্রসংখ্যা কত হবে?
লেখক : অধ্যাপক ইমেরিটাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন