নারদকা- তদন্তের নির্দেশ মমতার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এ বছরের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সাড়া জাগানো নারদকা- নিয়ে অবশেষে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্য সচিবালয় নবান্নে রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে মমতা এই নির্দেশ দেন। তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। নারদকা- ফাঁসের পর মমতা অবশ্য বলেছিলেন, যেহেতু এটা সত্য নয়, ষড়যন্ত্র। তাই এ নিয়ে তদন্তের অবকাশ নেই।
এবারের নির্বাচনের আগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান রাজীব কুমার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আগে রাজীব কুমারকে সরিয়ে ওই পদে আনেন সৌমেন মিত্রকে। এতে বেজায় চটে যান মমতা। নির্বাচনে জয়ী হয়ে মমতা ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সৌমেন মিত্রকে সরিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে ফিরিয়ে আনেন রাজীব কুমারকে। সেই রাজীব কুমারকে এবার মমতা নারদ কেলেঙ্কারি তদন্তের ভার দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় মমতা জানান, ‘আমি চাই এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। প্রকৃত সত্য মানুষের সামনে আসুক। তদন্ত করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে এই ঘটনার পেছনে কোনো চক্রান্ত আছে কি না?’ তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁরা অবশ্যই শাস্তি পাবেন।’
গত ১৪ মার্চ প্রথম ফাঁস হয় নারদকা-। ফাঁস হয় তৃণমূলের ১১ জন নেতা, সাংসদ, মন্ত্রী ও বিধায়কের ঘুষ নেওয়ার ছবি। দিল্লির নারদনিউজডটকম এই ঘুষ গ্রহণের ছবি ফাঁস করে। এই ছবি ফাঁস হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিরোধীরা নারদকা-কে হাতিয়ার করে নির্বাচনী প্রচারে নামে। মমতাও তখন বলেছিলেন, আগে জানলে তিনি নারদকা-ে জড়িত ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেবেন কি না, তা ভেবে দেখতেন। কিন্তু নির্বাচনের পর দেখা যায় নারদকা-ের প্রায় সব অভিযুক্তই জয়ী হন এবং ফিরে আসেন মন্ত্রীত্বে।
পরবর্তী সময়ে মমতা এই কা-কে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করে একে আমলে নেননি। যদিও এই নারদকা- নিয়ে মামলা হয় আদালতে। এ নিয়ে লোকসভার পাঁচ তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য গঠিত হয় এথিকস কমিটি। সেই কমিটির তদন্ত এখনো চলছে।
এই নারদকা- নিয়ে সিবি আইর তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে চারটি জনস্বার্থ মামলাও হয়। ভিডিওটি জাল কি না, তা পরীক্ষার জন্য হাইকোর্ট থেকে তা হায়দরাবাদের ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সেই রিপোর্টও দিন কয়েক আগে জমা পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।