রাতে পাটক্ষেতে ফেলে রাখা হয় লাশ শিশুকে পিটিয়ে রক্তাক্ত শরীরে লাগানো হয় ফেভিকল আঠা
শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না, সাতক্ষীরা : বাবা প্রবাসী। অর্থ উপার্জন করে সংসারের অভাব ঘোচানোর জন্য পরিবার থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন। চাকরি করেন মালয়েশিয়ায়। তার স্ত্রী ৮ বছরের শিশু সন্তান ফাহিমকে নিয়ে সাতক্ষীরা কুশখালি গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকেন। বিধিবাম! এই শিশুটিকে বর্বরোচিত ও পৈশাচিক কায়দায় হত্যার পর রাতের আঁধারে লাশ পাটক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। মাত্র এক কেজি মাংসের জন্য এই লোমহর্ষক ঘটনা ঘটায় একই গ্রামের ছফুরা, তার স্বামী মজিবুর রহমান এবং ২ ছেলে ইব্রাহিম হোসেন ও ইস্রাফিল হোসেন। এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে চারজনকে গ্রেফতার করা হলে হত্যাকা-ের মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। সদর উপজেলার কুশখালী গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেÑ স্থানীয় বাজারে মজিবুর রহমানের সাইকেল মেরামতের একটি গ্যারেজ রয়েছে। ১৪ জুন সকালে এক কেজি গরুর মাংস কিনে প্রতিবেশী ফাহিমকে দিয়ে বাড়ি পাঠান তিনি। সেই মাংস নিয়ে মজিবুর রহমানের বাড়ি গিয়ে ফাহিম দেখেÑ বাড়িতে কেউ নেই। এ সময় বাড়ির সামনে থাকা ভ্যানের উপর মাংস রেখে সে চলে আসে। পরে মজিবুরের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি এসে দেখে মাংসের প্যাকেট নিয়ে কুকুর টানাটানি করছে। একপর্যায়ে মজিবুরও বাড়িতে আসে। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে ডেকে পাঠায় এবং মাংসের প্যাকেট কোথায় রেখেছিল জানতে চায়। এ সময় তাকে বেদম মারধর করে। মারের চোটে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফেটে রক্ত বের হতে শুরু করে। তারা রক্ত বন্ধ করার জন্য ফেভিকল আঠা লাগিয়ে দেয়। এতে রক্ত বন্ধ না হয়ে উল্টো ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে ওঠে। তখন কোনো উপায় না পেয়ে তারা ফাহিমকে একটি বাক্সে বন্দী করে রাখে। সেখানেই শিশুটির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর রাতের কোনো এক সময় ফাহিমকে তারা পাশের একটি পাটক্ষেতে ফেলে আসে।
সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৫ জুন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালি সীমান্ত সংলগ্ন একটি পাটক্ষেত থেকে ফাহিমের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মনিরুল ইসলামের ছেলে ফাহিম তার মায়ের সঙ্গে কুশখালি গ্রামে নানা মোহাম্মদ আলির বাড়িতে থাকত। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী