মাদারীপুরে শিক্ষক হত্যাচেষ্টা রিমান্ডে থাকা ফাহিম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত
রাহাত হোসাইন, মাদারীপুর : মাদারীপুরে শিক্ষকের উপর হামলার সময় গ্রেফতার জঙ্গি গোলাম ফয়জুল্লাহ ফাহিম পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে এ বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ বলেন, ফাহিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত দুইটার দিকে পুলিশ অভিযানে নামে। গতকাল সকাল সাতটার পর সদর থানার মিয়ারচর এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে ফয়জুল্লাহর সহযোগীরা অবস্থান করছিল। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে থাকা ফয়জুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হন। পরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ২০ জন পুলিশ দুটি গাড়ি নিয়ে এ অভিযান চালায় বলে জানান ওসি। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক, তিনটি গুলি ও ছয়টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে কনস্টেবল আলী হোসেন আহত হন। তাকে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে পুলিশ লাইনের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ফয়জুল্লাহকে হত্যা, পুলিশের উপর হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় তিনটি মামলা হবে বলে জানান ওসি জিয়াউল মোর্শেদ।
এদিকে এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এমরানুল রহমান বলেছেন, পুলিশ একটা আসামি নিয়ে এসেছে, পরে আমরা জানতে পারি ওর নাম ফাহিম। আমরা তাকে মৃতই পেয়েছি। তার বুকে ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এর আগে শনিবার সকালে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সারওয়ার হোসেন বলেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ফয়জুল্লাহর সহযোগীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশের গাড়িতে গুলি লাগে। এ সময় ফয়জুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
শুক্রবার পুলিশ সুপার বলেছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ফয়জুল্লাহ বলেছেন যে, তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের হামলায় হিযবুত তাহরীরের কোনো সদস্য আটক হওয়ার এটা প্রথম ঘটনা।
ফাহিম উত্তরার দক্ষিণ খানে তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবা একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা, মা গৃহিণী।
প্রসঙ্গত, মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে বুধবার (১৫ জুন) বিকেলে নিজ বাসায় কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে দুর্বৃত্তরা। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তিনজনকে ধাওয়া করে এবং ফয়জুল্লাহ ফাহিমকে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। পরে ফাহিমের দেওয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ওই হামলার ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এরপর গত শুক্রবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। সম্পাদনা: সৈয়দ নূর-ই-আলম