গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে সাংবাদিকদেরও : প্রধানমন্ত্রী
রফিক আহমেদ : মাদারীপুরে শিক্ষককে খুন করতে গিয়ে যে ছেলেটি ধরা পড়েছিল সে শিবির নেতা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে ইফতার পার্টিতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গুপ্তহত্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আর কারও অবিশ্বাস করার কারণ নাই যে, গুপ্তহত্যা সুপরিকল্পিতভাবে হচ্ছে। হুমকি-ধামকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস এগুলোর বিরুদ্ধে জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে। সোচ্চার হতে হবে সাংবাদিকদেরও।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়ের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিককেও চিঠি দিয়ে ‘থ্রেট’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘তোর দাদাকে মেরেছি, তোকেও মারব, শেখ হাসিনাকেও মারব’। চিঠির এ ভাষা শুনে মনে হয়েছে, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া একসময় তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ চান’, তার মানে কি আমাকে তারাই খুন করতে চান? অতীতে জয়ের বিরুদ্ধে এফবিআই অফিসারকে ঘুষ দিয়ে কিনে নিয়ে খতম করার ষড়যন্ত্রের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তারেক জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক কুলাঙ্গার বসে আছে লন্ডনে। ব্রিটিশ সরকার কেন যে তাকে জায়গা দিলো বুঝি না। তারা আদর দিয়ে তাকে বসিয়ে রেখেছে। সে যাওয়ার পরই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এমপি খুন হয়েছে। টিউলিপকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
টেলিভিশনে রাতের টক শো অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাতের টক শোতে লাগাম ছাড়া কথাবার্তা বলা হয়। এখানে নিয়ম মানার কোনো বালাই নেই। অবশ্যই সমালোচনা করবেন, তবে সে সমালোচনা যাতে অকল্যাণমূলক নয়, মঙ্গলের জন্য হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। পাশাপাশি গণমাধ্যমের সকলের কাছ থেকে দায়িত্বশীলতাও আশা করি। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দিতে চাই। সাংবাদিকদের জন্যকল্যাণ ট্রাস্ট করেছি, অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছি। একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। তবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নীতিমালা করা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিক নেতারা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন পরিবার বহু সমবায় সমিতির মাধ্যমে আবাসন ব্যবস্থা করা, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে শক্তিশালীও করার দাবি জানান। এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমি তথ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। আর আমি তো এখানে এসে এর আগেও আপনাদের বলেছি যে, আপনারা জায়গা খুঁজে বের করেন, আপনারা জায়গা খুঁজে না পেলে আমি কী করব? এছাড়াও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিত্তি স্থাপনের বিষয়টি অবগত করলে তিনি তাকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
বিএফইউজে ও ডিইউজে’র ইফতার পার্টিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাফর ওয়াজেদ, মহাসচিব ওমর ফারুক, ডিইউজে’র সভাপতি শাবান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী। সম্পাদনা : দীপক চৌধুরী