প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে গুরুত্ব প্রধানমন্ত্রীর
দীপক চৌধুরী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর উন্নয়ন প্রক্রিয়া জোরদার করতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং যোগাযোগ উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় লোকসভার সদস্য এবং সে দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিত মুখার্জি গতকাল প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো তাদের মধ্যকার বিদ্যমান সুসম্পর্কের উত্তরণ ঘটিয়ে পারস্পরিক উন্নয়ন সাধন করতে পারে। একই সঙ্গে কানেকটিভিটির উন্নয়ন তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রকে আরও সম্প্রসারিত করবে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার এবং জনগণের মহান সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কখনও তাদের এ সহযোগিতার কথা ভুলে যাবে না।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য এ অঞ্চলের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ও প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল (বিবিআইএন) মোটরযান চলাচল চুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই চুক্তির ফলে চুক্তির অন্তর্গত এ অঞ্চলের পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল চারটি দেশই বিভিন্নভাবে লাভবান হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রানজিট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সিস্টেম সারা পৃথিবীতেই চালু রয়েছে। ইউরোপজুড়ে এক দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে অন্যদেশে পণ্য সরবরাহ করা হয়, তাই বলে কারোর সার্বভৌমত্বই কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ‘সীমান্ত হাট’ স্থাপনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের ফলে দুদেশের চোরাচালান অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আরও অধিক ‘সীমান্ত হাট’ স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এতে করে দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতার জন্য কাউকেই বাংলাদেশের ভূখ-কে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে না।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক অধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই কাল রাত্রিতে জাতির পিতাকে তার পরিবার-পরিজন এমনকি পরিবারের নারী ও শিশুসহ নির্মম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
নিজেকে একজন ভুক্তভোগী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কেউ কেউ এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ বিষয়ে কথা বলে না। পক্ষান্তরে, তাদের খুনিদের পক্ষ নিতেও দেখা যায়।
ভারতের জনতা বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালবাসে উল্লেখ করে অভিজিত মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অবস্থান ভারতীয়দের হৃদয়ে। তিনি বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শুভ কামনাও জানান। বাংলাদেশ সফরকালীন তার প্রতি প্রদর্শিত আন্তরিকতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মুহম্মদ ফারুক খান, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এবং মেহজাবিন খালেদ এমপি এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম