পুলিশের মৃত্যু হলে অবসর মেয়াদ পর্যন্ত পরিবার রেশন পাবে
হাসান আরিফ : পুলিশ সদস্যের অকাল মৃত্যু হলে তার পরিবার অবসর মেয়াদ পর্যন্ত রেশন সুবিধা পাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান স্বাক্ষরিত অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠির সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, পুলিশ সদস্য চাকরিরত অবস্থায় যেকোনো বয়সেই মারা যাক না কেনো, সে সদস্যের পরিবার তার অবসর গ্রহণের মেয়াদ পর্যন্ত (পিআরএল কালীন সময়সহ) রেশন পাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার চিঠিতে বলেছেন, চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের পারিবারিক রেশন সুবিধা দেওয়া হলে সমগ্র পুলিশ বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি পাবে।
সূত্র জানায়, পুলিশ সদস্যের অকাল মৃত্যুতে পরিবারের সর্বোচ্চ তিন সদস্য রেশন সুবিধা পাবে। এই রেশন সুবিধার জন্য মাসিক জনপ্রতি আনুমানিক ৩ হাজার টাকা হিসেবে বছরে ৩৬ হাজার টাকা ব্যয় হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার চিঠিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে বলেছেন, সামরিক বাহিনীর কোনো সদস্য কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার অবসরপ্রাপ্ত/পেনশনধারী ব্যক্তির ন্যায় আজীবন (পুনরায় বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত) ও প্রথম তিন সন্তান ২২ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত হারে রেশন সুবিধা পেতেন। যা পরবর্তীতে (২০০৭ সালের পরে) রেশন ভাতা হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (লজিস্টিকস) মো. সরওয়ার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছিল।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী সব পুলিশ সদস্যের অনুকূলে নিহতের ৫৯ বছর পূর্ণ পর্যন্ত সর্বোচ্চ তিন সদস্যের পারিবারিক রেশন দেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। যা পুলিশের সামগ্রিক বাজেটের তুলনায় তা নগণ্য বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৫০ জন পুলিশ সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যান। এতে নিহত পুলিশ সদস্যদের মানবেতর জীবনযাপনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, কর্তব্যরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্য নিহত হলে ওই পুলিশ সদস্যের পরিবারের জন্য বেতন, রেশন বন্ধ হয়ে যায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী এসব পুলিশ সদস্যের অকাল মৃত্যুতে সংসারের উপার্জন, বেতন ও রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আর্থিক কষ্টের পাশাপাশি অসহনীয় দুর্দশার সম্মুখীন হতে হয়। অর্থাভাব এবং অসচ্ছলতার কারণে তাদের সন্তানদের শিক্ষা গ্রহণও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সূত্রমতে চিঠিতে বলা হয়েছে, নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবার যাতে এ সমাজে মানবেতর জীবনযাপন থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে পারে, ওই বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনায় এনে তাদের জন্য রেশন প্রদান করা যেতে পারে বলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার মনে করে। সম্পাদনা: সৈয়দ নূর-ই-আলম