আলেমদের স্যালুট
অজয় দাশগুপ্ত
সবকিছু এলোমেলো হলেও এখনও বিনষ্ট হয়ে যায়নি। যাবার কথাও না। এটা কোনো ধূসর মরু বা বরফের দেশ নয়। এর শরীর এর প্রকৃতির মতো পেলব। এর জন্মলগ্ন থেকে আজ অবধি মায়া আর সহাবস্থান জড়াজড়ি করে আছে। এদেশের লালন ফকিরকে ঠিকমতো তুলে ধরা হলে দুনিয়া পাগল হয়ে যেত। হাত ধরাধরি করে চলে শ্রী চৈতন্য। ছোটবেলা থেকে যে সম্প্রীতি আর সহজাত মিলন তা হোঁচট খেলেও শেষ বা মচকে যায়নি এখনও। সেটাই টের পেলাম লাখো মাওলানা আলেমদের বিবৃতিতে।
কথায় বলে, দুধ বাড়িতে দিয়ে যেতে হয় আর মদ মানুষ দোকানে গিয়ে খায়। কুকুর মানুষ কামড়ালে খবর হয় না। মানুষ কুকুরকে কামড়ানোর অপেক্ষায় ক্যামেরা কলম হা করে বসে থাকে। এতবড় একটা ঘটনা তাই তেমন সাড়া ফেলল না। একসময়ের বনেদী ও শ্রদ্ধা জাগানো টুপি, দাড়ি, পাজামা, পাঞ্জাবি যখন ভয় বা আতঙ্কের হয়ে উঠছে, এইসব আলেমরা আবারও হানাহানির বিপরীতে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা কেড়ে নিলেও প্রচার পেলেন না তেমন।
অন্যদিকে, ঢাল তলোয়ারহীন কোথাকার হিন্দু পরিষদ হিন্দি ব্যানার টানিয়ে সভা করে রাতারাতি শিরোনাম হয়ে উঠল। নেগেটিভটি এক বিরাট রোগ। জাতি ও রাষ্ট্রকে তার রোগে ধরেছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ ঘাতক ধরিয়ে দিলে মাওলানারা মাঠে নামলে হিন্দুদের যারা সঠিক পথে রাখবে তাদের চোখে পড়ছে না। চোখে পড়ছে না কয়েক বছরের ভিতর ১৪৮ তলা ভবন নির্মাণ করে পাকিস্তানের বুক কাঁপিয়ে দেওয়ার খবর।
সব নেগেটিভের পরও দেশ চলছে, চলবে। মিডিয়া ও আমরা আরও পজেটিভ হতে পারলে অনেক আপদ পালিয়ে বাঁচবে। খামোখা নেগেটিভটি বিপদকে ত্বরান্বিত করে। এটাও এখন ভাবার বিষয় বৈকি।
লেখক : সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট, বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন