আপিল করবেন ট্যানারি মালিকরা
হাসান আরিফ : দিনে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ঠেকাতে উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন ট্যানারি মালিকেরা। তাঁরা হাজারীবাগ থেকে প্রতিষ্ঠান সাভারে সরিয়ে নিতে আদালতের কাছে আরও বেশ কিছুদিন সময় চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ট্যানারি মালিকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) নেতারা গতকাল শনিবার বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মালিকেরা বলছেন, ঈদুল আজহার আগে ট্যানারি সাভারের চামড়া শিল্পনগরে সরিয়ে নিতে চান তাঁরা।
এদিকে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরাতে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিদিনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে গতকাল আলাদাভাবে বৈঠক করে ট্যানারি মালিকদের দুই সমিতি। পরে তারা আলাপ করে আপিলের সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানান সমিতি দুটির নেতারা। বিএফএলএলএফইএর সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রথমে আদালতের রায় সংগ্রহ করব। তারপর আইনজীবীর সঙ্গে আলাপ করব। যদি আপিলের সুযোগ থাকে, তাহলে আপিল করা হবে।’
হাজারীবাগ থেকে ১৫৫টি ট্যানারি সরিয়ে সাভারের চামড়া শিল্পনগরে নিতে ২০০৩ সালে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। দফায় দফায় সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে সেই প্রকল্প এখনো বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ট্যানারি মালিকদের অভিযোগ, সরকার এখনো কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) নির্মাণ শেষ করতে পারেনি। অন্যদিকে সরকার বলছে, বর্জ্য পেলেই সিইটিপি চালু সম্ভব।
সর্বশেষ মালিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানোর প্রক্রিয়া শেষ করতে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার। অবশ্য সেই সময় অনেক আগে পেরিয়ে গেছে। মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঈদুল আজহার আগে সব ট্যানারি সাভারে সরিয়ে নিয়ে যাব। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে আমরা সরকারকে চাপ দেব। আমরাও চাই কোরবানির চামড়া যাতে হাজারীবাগে ঢুকতে না পারে।’
কোনো ট্যানারি কাজ শেষ করতে না পারলে বড় কারখানাগুলো তাদের ওয়েট ব্লু করার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিটিএর সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, সাভারে ট্যানারি নেওয়ার কারণ হলো পরিবেশদূষণ বন্ধ করা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চামড়া শিল্পনগরে এখনো বর্জ্য ফেলার জায়গা বা ডাম্পিং গ্রাউন্ড নির্মাণ শেষ করতে পারেনি। সিইপিটি নির্মাণও শেষ হয়নি।
শাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ১৪৩টি ট্যানারি দ্রুতগতিতে তাদের নির্মাণকাজ করছে। সে তুলনায় সরকারের গতি কম।