দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে হচ্ছে আরও ৩টি চীন বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু
আনিসুর রহমান তপন : চীন সরকারের অনুদানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ৯ম, ১০ম ও ১১তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ করা হবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে এ সহযোগিতা করতে চায় চীন। এ লক্ষ্যে গতকাল রোববার সেতুগুলো নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই ও ডিটেইল ডিজাইন প্রণয়নের লক্ষ্যে চীন সরকারের পক্ষে লি: গুয়ানজুন ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব এমএএন সিদ্দিক মিনিটস অব মিটিং (এমওএম) স্বাক্ষর করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এমওএম স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে সড়ক-সেতু নির্মাণে চীনের অংশগ্রহণ দীর্ঘদিনের। ইতোমধ্যে চীনের অর্থায়নে ৭টি মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু বা বেকুটিয়া সেতু নির্মাণের বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের জন্য গত সপ্তাহে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। আরও ৩টি মৈত্রী সেতু নির্মাণে চীন সরকার অর্থায়ন করবে। তবে এগুলো কোনো ঋণ নয়, শুভেচ্ছার নিদর্শন স্বরূপ সরাসরি চীন সরকারের অনুদান।
মন্ত্রী জানান, সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী চীন সরকারের নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে পটুয়াখালী, বাগেরহাট এবং খুলনা জেলায় এ তিনটি সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করবে। আশা করা হচ্ছে চলতি বছরের মধ্যে সেতু ৩টির কাজ শুরু হয়ে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হবে। বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালী জেলার ডুমকি ও বাউফল উপজেলার লোহালিয়া নদীর উপর বগা সেতু বা ৯ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। সংযোগ সড়কসহ সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ২০মিটার। এরমধ্যে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৫৬ মিটার।
বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার মংলা নদীর উপর মংলা সেতু বা ১০ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। সংযোগ সড়কসহ সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৫০ মিটার। এর মধ্যে মূল সেতুটি হবে ৩৭২মিটার দীর্ঘ।
খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার ঝপঝপিয়া নদীর উপর ঝপঝপিয়া সেতু বা ১১তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটি সংযোগ সড়কসহ দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪০ মিটার। এর মধ্যে মূল সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪৩৪ মিটার।
নতুন তিন সেতুর ঘোষণার পরপরই একই স্থানে ঈদ উপলক্ষে ঢাকার পার্র্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে যানজট নিরসনে অনুষ্ঠিত এক সভায় সাংবাদিকরা ‘প্রতিবছরই বাসে সরকার নির্ধারিত হারের চাইতে বেশি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সেরকম কোনো অভিযোগ পেলে অবশ্যই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাস টার্মিনালে আমাদের ভিজিলেন্স টিম থাকবে, বেশি ভাড়া চাইলে যাত্রীরা ভিজিলেন্স টিমকে জানাতে পারেন।
ঈদের সময় ঢাকার আশপাশের যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোর ১৬টি পয়েন্টে এক হাজার রোভার স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে জানিয়ে কাদের বলেন, স্থানগুলো হলো, কাঁচপুর, মেঘনা, ভুলতা, নবীনগর, আশুলিয়া, জিরাবো বাজার, বাইপাইল, কোনাবাড়ী, চন্দ্রা, পাকুল্লা, কালিয়াকৈর, কাঞ্চন সেতু, মদনপুর, গোমতী সেতু ও এলেঙ্গা। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের ১০ দিন আগে ঢাকার পার্শ¦বর্তী এলাকায় সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ঈদের আগে পরে তিন দিন করে ৬ দিন পঁচনশীল পণ্য ছাড়া সব ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি