![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
তিস্তার জট ছাড়াতে নতুন করে উদ্যোগী হচ্ছে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্থলসীমান্ত চুক্তির পর এবার তিস্তা চুক্তির জট কাটাতে নতুন করে উদ্যোগী হতে চলেছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের জাতীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এনডিএ) সরকার।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই দুই দেশের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত ছিটমহল বিনিময় কার্যকর হওয়ার পর এবার সেই সম্ভাবনাই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তিস্তা চুক্তির জট ছাড়াতে খুব শিগগিরই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের সঙ্গেও বৈঠকে বসতে চলেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলাদেশ প্রতিদিন
রোববার নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তিস্তা প্রসঙ্গে জানান, ‘তিস্তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে তিনটি পক্ষ। বাংলাদেশ সরকার, ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের মধ্যে (ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার) অভ্যন্তরীণ ঐক্যমতে পৌঁছানোর পরই এই চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা সামনের দিকে এগোতে পারব’।
প্রসঙ্গত, তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতা করেই ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরসঙ্গী হননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বাতিল হয় তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি। দুই দেশের সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়ে। নিজ নিজ দেশে সমালোচনার মুখে পড়ে মনমোহন এবং হাসিনা। কম সমালোচনা হজম করতে হয়নি মমতাকেও। এরপর কয়েকদফায় মনমোহন সিং নিজের উদ্যোগে তার মন্ত্রিসভার সিনিয়র মন্ত্রীদের পাঠিয়ে মমতাকে বোঝানোর উদ্যোগ নিলেও মমতার অনড় মনোভাবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের কঠোর অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন মমতা। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক ভাষা শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ছিটমহল বিনিময় ও তিস্তা পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার উদ্যোগ নেবে বলে আশ্বাস দিয়ে আসেন মমতা।
মমতা সম্মতি দেওয়ায় গত বছরের মে মাসের গোড়াতেই ভারত-বাংলাদেশ ৪১ বছরের পুরনো স্থলসীমান্ত চুক্তি সংশোধনী বিল পাস হয় ভারতের সংসদে। এরপর গত ৩১ জুলাই দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ছিটমহল বিনিময় কার্যকর করা হয়। এবার সেই পথ ধরেই তিস্তা চুক্তিও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ভারত সরকার।
তিস্তা চুক্তি সেরে ফেলতে ভারত সরকার যে কতটা বদ্ধপরিকর তা সুষমার এদিনের কথাতেই পরিষ্কার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিং-কে পাশে বসিয়ে সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘গত এক বছর ধরে রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় ব্যস্ত ছিলেন। সেই কারণে গত এক বছর ধরে এই বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা করা যায়নি। কিন্তু নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ায় কারণে তার (মমতা) ব্যস্ততা আগের চেয়ে কমেছে এবং দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তাছাড়া আমরা লক্ষ্য করছি তিনি (মমতা) নিজেও বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চান। নিজের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাই আমার মনে হয় এটাই হচ্ছে সেরা সময় যে, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আভ্যন্তরীণ ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারব’।
আসলে মমতা চান পানির উৎস এবং পশ্চিমবঙ্গে তিস্তায় প্রবাহিত পানির মওসুমওয়ারি পরিমাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সবিস্তারে জেনে তবেই বাংলাদেশের সঙ্গে পানিবণ্টনের অনুপাত ঠিক করা হোক। যাতে রাজ্যের কৃষকরাও পানি থেকে বঞ্চিত না হয়। ভারত সরকারও চাইছে বিষয়টি নিয়ে মমতার সঙ্গে বৈঠক করে সমস্ত পক্ষের স্বার্থ বজায় রেখেই এই চুক্তি নিয়ে মমতার আপত্তি যাতে দূর করা যায়। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)